সকল মেনু

হরতাল-অবরোধের কারণে হতাশ কুলচাষিরা

কুলসাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় কুল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বানিজ্যিক ভাবে কুল চাষ করে এ জেলার প্রান্তিক কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছে। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া কুল চাষের উপযোগী হওয়ায় চাষীরা উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে এর আবাদ।
সাতক্ষীরার কুল খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় দেশ ব্যাপী এর চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে শত শত মেট্রিক টন কুল চলে যাচ্ছে ঢাকা,খুলনা,বরিশাল,চট্রোগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে সম্প্রতি বিরোধী দলের ডাকা হরতাল ও অবরোধের কারনে এ বছর কুল মৌসুমের শুরুতে কুলের ন্যার্য দাম পাচ্ছে না কৃষকেরা। ফলে কুল চাষিরা বেশ হতাশ।
সাতক্ষীরার মাটি কুল চাষের জন্য উপযোগী। মূলত ২০০০ সালের পর থেকে এ জেলায় বানিজ্যিক ভাবে কুল চাষ শুরু হয়। ফসলটি লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসল উৎপাদন কমিয়ে এ জেলার শত শত কৃষক কুল চাষ শুরু করেছে। কৃষকেরা জানায়, ধান-পাট ও অন্যান্য রবি শষ্য উৎপাদন করে বিঘাতে সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা লাভ করা অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে । কিন্ত বাউকুল,আপেলকুল, তাইওয়ানকুল,নারিকেলী,ঢাকা নাইনটিসহ বিভিন্ন জাতের কুল চাষে বিঘাপ্রতি ৯০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব। অথচ কুল চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় জেলার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কুল চাষ।
কলারোয়ার কুল চাষী সিরাজুল ইসলাম জানান, জেলার কুল চাষীরা এ বছর বিষমুক্ত কুল উৎপাদনের জন্য কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার করেছে কম্পোজ সার। এতে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপশি চাহিদাও বেড়েছে। তবে মৌসুমের শুরুতে হরতাল -অবরোধের কারনে উৎপাদিত কুল তারা বাইরের জেলাতে পাঠাতে পারছে না। বিপনন করতে না পারায় কুলের দাম কমেছে। ন্যার্যমূল্য না পেয়ে কুল চাষিরা বেশ হতাশ।
দেশের রাজনৈতিক দল গুলো প্রান্তিক কৃষকদের কথা চিন্তা করে তাদের উৎপাদিত পন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিপননের ব্যবস্থা করার বিষয়টি গুরুতের¡ সাথে বিবেচনা করবেন এমনটিই প্রত্যাশা এ জেলার কৃষকদের।
চট্রোগামের কুল ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, সাতক্ষীরার উৎপাদিত সবধরনরে কুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে চট্রোগ্রাম অঞ্চলে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে বাউকুল। তিনি বলেন, বাউকুলের পাইকারী দর যাচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০টাকা। যা সাতক্ষীরা থেকে নিয়ে আসেন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। ফলে সাতক্ষীরার দামের তুলনায় বেশি দাম পাওয়া যায় চট্রোগ্রামে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. আব্দুল গফুর বলেন, বাউকুল অন্যান্য কুলের চেয়ে অধিক ফসনশীল। পুষ্টিগুনেরও দিক থেকেও অন্যান্য কুলের তুলনায় কম নয়।
তিনি বলেন, চলতি বছর এ জেলায় ৩৬৫ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া কুল চাষের উপযোগী হওয়ায় এটি উৎপাদনে এখানকার কৃষকরা খুবই সাফল্য অর্জন করেছে। দিন দিন এর আবাদ বাড়ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top