সকল মেনু

মেট্রোপলিটন হবে গাজীপুর, ১০ থানা নিয়ে

GMP

হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) ইউনিট গঠনের প্রস্তাব করেছে পুলিশ। জিএমপিতে বর্তমানে থাকা তিনটি থানার অংশ নিয়ে মোট ১০ থানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বর্তমানে গাজীপুর জেলায় এসপিসহ বিভিন্ন পদ মর্যাদার ৩২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছেন। সেখানে মেট্রোপলিটনের প্রধান ডিআইজিসহ ৮ হাজার ২২৬ পদের প্রস্তাব করা হয়েছে। গাড়ি চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ২১৭টি। এতে বছরে খরচ হবে ১৮৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

জিএমপির থানাগুলোর নাম হবে সালনা থানা, জয়দেবপুর থানা, চৌরাস্তা থানা, কোনাবাড়ী, মৌচাক, কাশিমপুর, বোর্ড বাজার, মীরেরবাজার, টঙ্গী পূর্ব থানা, টঙ্গী পশ্চিম থানা।

পুলিশের তরফ থেকে পাঠানো প্রস্তাবনাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হয়ে এখন আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের (সম্মতি) অপেক্ষায় রয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এ তথ্যসব তথ্য জানা গেছে।

আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং শেষে সেটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন হলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে যাত্রা শুরু করবে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিট।

দেশে বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনায় মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিট রয়েছে। গাজীপুর অনুমোদন পেলে সপ্তম মেট্রোপলিটন হিসেবে যাত্রা শুরু করবে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর ২২ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, গাজীপুর ও টঙ্গী পৌরসভা এলাকার ৩২৯.৯০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়েছে। গাজীপুর শহর এলাকায় অসংখ্য গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিসহ বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমানে বিস্তৃত গাজীপুর শহরের জনসংখ্যা প্রায় ২০ লাখ।

গাজীপুর শহরের ওপর দিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় রাষ্ট্রীয় উচ্চ পর্যায়ে ব্যক্তিরা যাতায়াতসহ বহু বাস-ট্রাক যাতায়াত করে থাকে। ফলে জেলা পুলিশের কার্যপরিধি বেড়েছে। ফলে জেলা পুলিশের স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে যানজট নিরসন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

গাজীপুর শহর এলাকায় একটি সমরাস্ত্র কারখানা, একটি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (টাকশাল), বাংলাদেশ কৃষি ও ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট, টেলিযোগাযোগ স্টাফ কলেজ, কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র, কাশিমপুর কেন্দ্রিয় কারাগার, জেলা কারাগার, টেলিফোন শিল্প সংস্থা, দুটি রেলওয়ে জংশন, একটি রেলওয়ে স্টেশন, দুটি সরকারি হাসপাতাল, ১০/১২ টি বাস স্টেশন, বিভিন্ন ব্যাংকসহ নানা সরকারি-বেসকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এছাড়া জাতীয়, উন্মুক্ত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক, মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, দুটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, একটি সরকারি মাহিলা কলেজ, বহু সরকারি ও বেসরকারি কলেজ, মাধ্যমিক, প্রাইমারি স্কুল, কিন্ডারগার্টেনসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে স্থানীয় ও জাতীয় ইস্যুতে প্রায়ই অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়।

প্রস্তাবে আরো বলা হয়, মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এতে লাখ লাখ মুসল্লির আগমন ঘটে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিশাল শহরের আইন শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, গোলযোগ দমনসহ নিরাপত্তা বিধান করা জেলা পুলিশের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

প্রস্তাবে বলা হয়, গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর, টঙ্গী, এবং কালিয়াকৈর থানার মৌচাক ও সফিপুর ইউপি এলাকা নিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিট (জিএমপি) স্থাপনের প্রস্তাব করা হলো।

এছাড়া গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আট হাজার ২২৬টি পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬৫টি ক্যাডার পদ। এর মধ্যে ডিআইজি পদবির একজন দায়িত্ব পালন করবেন কমিশনার হিসেবে। তিনজন অতিরিক্ত ডিআইজি, এসপি পদ মর্যাদার ২১ জন ডিসি (ডেপুটি পুলিশ কমিশনার), এডিসি ৪৯ জন ও এএসপি ১৯১ জনের পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের বছরের ১৬ জানুয়ারি গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। সেখানে নির্বাচনও সম্পন্ন হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত পদগুলোর জন্য বছরে (আবর্তক ও অনাবর্তক খাতে) ১৮৩ কোটি ৫৯ লাখ, ২২ হাজার ৪৫৬ টাকা প্রয়োজন হবে।

এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন হওয়ার পরও গাজীপুর জেলা পুলিশ বিদ্যমান থাকবে। মেট্রোপলিটন হলে বর্তমানে জয়দেবপুর, টঙ্গী থানা ও জয়দেবপুরের টিওপি ও মৌচাক পুলিশ ফাড়ির জনবল মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top