সকল মেনু

সোনা রাখসদের দ্রুত ধরা হবে!

হটনিউজ ডেস্ক :: একের পর এক সোনা চোরাচালানের ঘটনার গোয়েন্দারা সম্প্রতি যে তদন্ত শুরু করেছেন তার সূত্র ধরে বের হয়ে আসছে বিমান, কাস্টমস ও বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) এর দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের নাম। এ কারণে শিগগিরই দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খুব বড় ধরনের অভিযানের পরিকল্পনা করেছেন গোয়েন্দারা।

ইতোমধ্যে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর সদস্যরা এই চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্তদের একটি নতুন তালিকা প্রস্তুত করেছেন। ১৫ জনের ওই তালিকায় নাম রয়েছে বিমানের একজন ক্যাপ্টেন থেকে শুরু করে দুই জন ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেরও।

ডিবি’র একজন তদন্তকারী জানান, এরইমধ্যে তারা ওই ১৫ জনের ঠিকানা এবং যাবতীয় সব তথ্য সংগ্রহ করেছে। শুক্রবার রাতে বা শনিবার সকালেই এই অভিযান শুরু হতে পারে। এ ব্যাপারে কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না বলেও জানান ওই ডিবি কর্মকর্তা।

গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার হযরত শাহজালাল অান্তর্জাতিক বিমানবন্দর, উত্তরা ও বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডিবি সদস্যরা এই চোরাচালান চক্রের পাঁচ জনকে অাটক করে। তাদের মধ্যে তিন জন বিমানের শীর্ষ কর্মকর্তা- ক্যাপ্টেন অাবু মোহাম্মদ অাসলাম শহীদ, ফ্লাইট সার্ভিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এমদাদ হোসাইন এবং সময়সূচি ব্যবস্থাপক তোজাম্মেল হোসেন। অার বাকি দুজন হলেন বিমানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রভাবশালী ঠিকাদার মাহমুদুল হক পলাশ এবং উত্তরার একটি মানি এক্সচেঞ্জের মালিক মো. হারুনুর রশিদ।

ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, তারা মোটামুটি ৪০ জনের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছেন। এই তালিকায় বিমান কর্মকর্তারা ছাড়াও কিছু বহিরাগত মানুষ ও মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীও রয়েছেন। এসব ব্যবসায়ীরা অারব অামিরাতসহ বিভিন্ন দেশের চোরাকারবারীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে অাসেন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের দেওয়ার জন্য। রাজধানীর উত্তরা, মতিঝিল এবং পল্টন এলাকায় এমন ১০টি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান অাছে যারা এই কাজে জড়িত। তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে বলে জানান ডিবি কর্মকর্তা।

জানা গেছে, গোয়েন্দারা প্রাথমিকভাবে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত পুরো চক্রটির হদিস বের করতে চাইছেন। তবে ওই সব দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা কালো টাকার বিনিময়ে যে অবৈধ সম্পত্তি অর্জন করেছেন সে বিষয়ে তারা এখনো কোনও কাজ করছেন না।

এ ব্যাপারে একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অামরা জেনেছি রাজধানীতে তারা একাধিক জমি, বিলাশবহুল ফ্ল্যাট ও গাড়ির মালিক। কিন্তু এই মুহূর্তে অাগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে পুরো চক্রটির হদিস বের করার ওপর। অামি মনে করি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের অবৈধ সম্পত্তির বিষয়ে পরে তদন্ত করবে।’

তিনি অারও বলেন, ‘অামরা অবাক হয়েছি গ্রেফতার হওয়া পলাশের সম্পত্তির কথা জানতে পেরে। তিনি নিজেকে বিমানের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন অাহমেদের ‘ধর্মপুত্র’ বলে পরিচয় দিতেন। তিনি অাসলে ঠিকাদার নন এবং তার উপার্জনেরও অন্য কোনও খাত নেই। তারপরও তার বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে।’

এর অাগে বুধবার গ্রেফতার হওয়া অারেক জ্যেষ্ঠ বিমান কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিলেন যে, এই চক্রের পেছনে মূল কলকাঠি নাড়ছেন রাজনৈতিক হোমড়াচোমড়ারা। এই চক্রের মদতদাতাদের মধ্যে মন্ত্রী থেকে শুরু করে অাইনজীবী, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তারও অাছেন। গ্রেফতারকৃতরা সাধারণত চোরাচালান অ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়ন অংশেরই দেখাশুনা করতো। এজন্য তারা বিমানের ভেতর-বাহির সম্পর্কে ভালোভাবে জানে এমন প্রকৌশলীদেরসহ অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদেরও এই কাজে যুক্ত করেছিল।

সম্পাদনায় / জীবন

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top