সকল মেনু

ভোলায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ-ডেক্সটপ অকেজো

 এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা: ভোলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ-ডেক্সটপ অকেজো থাকায় কম্পিউটার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। নিন্ম মানের কম্পিউটার, বিদ্যুৎ সমস্যা ও রক্ষণা-বেক্ষণের বাজেট না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কম্পিউটার মেরামত করে ক্লাশ চালাতে পারছে না। এমনকি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে অন্যান্য বিভাগের ক্লাশ নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। সূত্রে জানা যায়, ভোলা জেলার ২শ’ ৬৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২শ’ ৪৪টি মাদ্রাসার মধ্যে ৫৬টি ব্যতিত বাকি সবক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কম্পিউটার সামগ্রী রয়েছে। আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্পের অধিনে ভোলার এ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার সরবরাহ করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্প ছাড়াও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, বরিশাল আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ট্রিচার্স ট্রেনিং কলেজ, হায়ার সেকেন্ডারী ট্রিচার্স ট্রেনিং সেন্টার, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড, বিভিন্ন এনজিও এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কম্পিউটার সামগ্রী বিতরণ করেন। কিন্তু কম্পিউটার সামগ্রী বিতরণ করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার খোজ-খবর, মনিটরিং কিংবা রক্ষণা-বেক্ষনের জন্য কোন বাজেট বরাদ্দ করছেনা। যে কারণে পর্যাপ্ত কম্পিউটার সামগ্রী, প্রশিক্ষিত শিক্ষক এবং আগ্রহী শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও এই কর্মসূচীতে কোন সফলতা আসছে না। ভোলা শহরের চরনোয়াবাদ মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাশ করলে ভালো শিখতে পারি। কিন্তু বেশীরভাগ সময় ল্যাপটপ নস্ট থাকায় প্রজেক্টর বন্ধ থাকে। ভালোমত ক্লাশ করতে পারি না। অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, কম্পিউটার প্রায়ই নষ্ট থাকে। আর ঠিক থাকলেও কারেন্ট থাকে না। কারেন্ট থাকলেও লো-ভোল্টেজ থাকে, কম্পিউটার চলেনা। আমরা থিওরিকাল ক্লাশগুলি পাইলেও প্রাকটিক্যাল ক্লাশ করতে পারিনা। ফলে কম্পিউটার সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করলেও কাজে লাগাতে পারছিনা। অন্যদিকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অধিকাংশ কম্পিউটারের ব্যাটারী ডাউন, প্রসেসর নিন্মমানের, হার্ডডিক্স ও মাদার বোর্ড দুর্বল, র‌্যামের গতি কম এবং বিদ্যুৎ সমস্যাসহ নানা কারণে এগুলো চালানো যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে ভোলা কম্পিউটার শিক্ষক এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিন্ম মানের কম্পিউটার সরবরাহ করায় আমরা ভোগান্তির শিকার হয়েছি। এছাড়া শহরে নাম মাত্র থ্রিজি গতি পাওয়া গেলেও গ্রাম এলাকায় নেটওয়ার্ক খুবই দুর্বল। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাই। যেখানে গিয়েছি সেখানেই দেখেছি কম্পিউটারগুলো অচল। এসব অচল কম্পিউটারগুলো সচল করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারীভাবে বরাদ্দ পাচ্ছে না। স্থানীয়ভাবে দু’একবার মেরামত করলেও বেশিরভাগ সময়ই অকেজো অবস্থায় ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন এক প্রধান শিক্ষক। এ ব্যাপারে চরনোয়াবাদ মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের বলেন, কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে মেরামত করতে অনেক টাকা লাগে। স্কুলের পক্ষে বারবার মেরামত করা সম্ভব হয় না। এভাবে নানা বিরম্বনা ও বাজেট সল্পতার কারণে কম্পিউটার ক্লাশ নিতে হিমসিম খাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভোলার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার শিক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই প্রত্যাশা এখানকার ছাত্র-শিক্ষক ও অভিবাবকদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top