সকল মেনু

ভোলায় নতুন ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কার্যক্রম-২০১৪

 এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা: ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারীর আগে যাদের জন্ম কিংবা আগামী ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারী যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদেরকে ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করার কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। দ্বীপজেলা ভোলায় এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নতুন ভোটার তালিকায় যোগ হয়েছেন আরো ৫৭ হাজার ১শ’ ৮০ জন ব্যক্তি। তবে প্রচার-প্রচারণা কম হওয়ায় এ সুযোগ থেকে বাদ পড়েছেন অনেকেই। বঞ্চিত ভোটাররা অভিযোগ করেছেন তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ী বাড়ী গিয়ে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ না করায় বাদ পড়েছেন তারা। জেলা নির্বাচন বিভাগ অবশ্য জানিয়েছে, ২০১৫ সালের জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে ভোটার হালনাগাদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করার পর বাদ পড়া ভোটারদেরকে তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী ভোলায় ভোটারের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৯০ হাজার ৫শ’ ৭ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু জনিত কারণে বাদ পড়েছেন ১ হাজার ৬শ’ ৮৯ জন। ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় নতুন ভোটার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন জেলার লক্ষাধিক মানুষ। কিন্তু ভোটার হওয়ার সুযোগ মেলেনি সবার ভাগ্যে। বঞ্চিত হয়ে অনেকে এখন জেলা নির্বাচন অফিসে ভীড় করছেন। নতুন ভোটারদের অর্ন্তভূক্ত করার জন্য প্রথম ধাপে ভোলা জেলার দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন ও মনপুরা উপজেলার তথ্য সংগ্রহ এবং ছবি তোলার কার্যক্রম গত ২২ মে শুরু হয়ে ২৭ জুন শেষ হয়।  দ্বিতীয় ধাপে লালমোহন, চরফ্যাশন ও তজুমদ্দিন উপজেলায় এ কার্যক্রম ১৫ জুন শুরু হয়ে শেষ হয় ২৯ আগষ্ট।  তৃতীয় ধাপে ভোলা সদর উপজেলার কার্যক্রম ১ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে এখনও চলছে। বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কাজ গত ৯ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার পর ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ছবি তোলার কাজ শুরু হয়। যা চলবে আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু কম প্রচার, তথ্য সংগ্রহকারীদের দায়িত্বে অবহেলা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে অনেকেই বাদ পড়েছেন নতুন ভোটার তালিকা থেকে। তাদের অভিযোগ তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ীতে যান নি। কর্তৃপক্ষের প্রচারণাও তাদের চোখে পড়েনি। অভিযোগ করে ভোলা শহরের এক ভোটার বলেন, আমি থাকি শহরের শিল্পকলা একাডেমীর পাশে। আমি ভোটার হওয়ার খবর পাই নাই। যে কারনে ভোটার হইতে পারি নাই।  অপর একজন ভোটার বলেন, ভোটার হমু ক্যামনে। তথ্য সংগ্রহকারীরাতো আমাগো বাড়ী যায় নাই। শুধু আমি না, আমার মত অনেকেই ভোটার হইতে পারে নাই। খবর পাইলাম ভোটার হওয়ার সময় শেষ। ইলেকশন অফিসে আইলাম। তারা বললো পরে ভোটার করে নিবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য জেলার ৭ উপজেলায় ৬শ’ ৮০ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ১শ’ ৬৯ জন সুপারভাইজারসহ জেলা নির্বাচন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের দাবী তারা বাড়ী বাড়ী গিয়ে ঠিকই তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভোটাররা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবসহ নানা কারণে ভোটার হতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ভোলা শহরের একজন তথ্য সংগ্রহকারী বলেন, আমি আমার এলাকার প্রত্যেকটি বাড়ীতে গিয়েছি। অনেকে ভোটার হতে বাবা-মা কিংবা স্বামীর ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর, জন্ম নিবন্ধন, এসএসসি’র সার্টিফিকেট লাগে। অনেকে এগুলো সংগ্রহ করতে পারে না। তাই ভোটার হতে চায় না। কেউ কেউ বলে ভোট দিতে পারি না, ভোটার হয়ে কি লাভ ?  এ ব্যাপারে ভোলা জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিন খান জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য নির্বাচন কমিশন ও জেলা নির্বাচন বিভাগ এবং ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ, স্থানীয় এনজিও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাইকিং, পোষ্টার, ব্যানারসহ ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। কমিশন নির্ধারিত শতকরা ৫ ভাগ ভোটার বৃদ্দি করার যে টার্গেট দেয়া হয়েছে ভোলায় তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমান ব্যক্তি ভোটার হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা যে বাড়ী বাড়ী যায় নি কথাটি সঠিক নয়। তারা যদি বাড়ী বাড়ী না-ই যেত তাহলে এত ভোটার হলো কি করে ? কমিশনের টার্গেটের চেয়ে বেশি পরিমাণ ব্যক্তি ভোটার হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় তথ্য সংগ্রহকারীরা সঠিক মত কাজ করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top