সকল মেনু

গুণ্ডা কোলের শিশু ‘কুখ্যাত ’!

  ডেস্ক রিপোর্ট : এখনো ভালো করে হাঁটতে শেখেনি সে। কাটেনি জিহ্বার আড়ষ্টতা। মা-বাবার কোল এখনো তার পরম নিরাপদ আশ্রয়। তবু এক বছরের শিশুর বিরুদ্ধে নির্বাচনের সময় বুথ দখলের দায়ে মামলা করেছে পুলিশ। তা-ই নয়, বৃহস্পতিবার রীতিমতো অপরাধী হিসেবে তাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। মামলার নথিতে তাকে ‘জেলার কুখ্যাত গুণ্ডা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুটির নাম নাজিম। তার বাড়ি ভারতের উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের ঠাকুরদাওয়ায়। বেশ কিছু মারাত্মক অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।  উত্তরপ্রদেশ উপনির্বাচনে গোলমাল পাঁকানো ও নির্বাচনী বুথ দখলের অভিযোগে পুলিশের দৃষ্টিতে দোষী সে।

নাজিমের বাবার নাম ইয়াসিন (২৮) । বাবা-ছেলে একই অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মোরাদাবাদের ঠাকুরদাওয়া উপনির্বাচন কেন্দ্রে নির্দিষ্ট এক প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটদাতাদের শাসানো এবং এলাকার শান্তি বিঘ্নের চেষ্টা করে নাজিম ও ইয়াসিন।

অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯৭৩ সালের সিআরপিসি আইন অনুসারে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৭/১৬ ধারায় পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন এসডিএম। গ্রেফতার এড়াতে নাজিম ও তার বাবা ইয়াসিনকে নিরাপত্তা বন্ড জমা দিতে হয়েছে।

কী বলা হয়েছে পুলিশের রিপোর্টে? ওই রিপোর্ট অনুসারে, নির্বাচনের দিন ঠাকুরদাওয়া নির্বাচন কেন্দ্রের অধীনে উসমানপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিম ও তার বাবা ইয়াসিন ভোট বুথ দখলের চেষ্টা করে এবং নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোটারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, এক বছরের নাজিমকে `জেলার কুখ্যাত গুন্ডা` হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে পুলিশের রিপোর্টে। গত শনিবার পিতা-পুত্রের নামে সমন জারি করতে উসমানপুর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় পুলিশ। ব্যাপার-স্যাপার দেখে আতঙ্কে বিহ্বল গোটা পরিবার।

গ্রেফতার ঠেকাতে শিশুপুত্রকে নিয়ে এসডিএম-এর কাছে দৌড়ান ইয়াসিন। হাজতবাস এড়াতে দুজনের নামে ৫০ হাজার টাকার নিরাপত্তা বন্ড জমা দিতে হয় তাকে। তবে ইয়াসিন জানিয়েছেন, তার নামে বন্ড জমা নিলেও নাজিমের নামে তা জমা নিতে অস্বীকার করেন আদালতের কর্মকর্তারা। অনেক বোঝালেও ঘটনাটি `হাস্যকর` বলে উড়িয়ে দেন এক কর্মকর্তা। কিন্তু অফিসার হাসলেও স্বস্তি ফেরেনি উদ্বিগ্ন ইয়াসিনের মনে। তবে এসডিএম নিজে তাকে আশ্বাস দিয়েছেন, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।

এ প্রসঙ্গে মোরাদাবাদের ডিআইজি গুলাব সিং জানান, `বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ওই শিশুর নামে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা রিপোর্ট ফাইল করা হয়েছে। ঠাকুরদাওয়া থানার ওসি, এসআই ও সিপাইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে।

ইয়াসিনের অভিযোগ, ভোটের দিন তার কাছে তোলা আদায় করতে আসে থানার সেপাই ভগবান সিং ও তার সাগরেদ। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করার পর তার ও তার শিশুপুত্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে রিপোর্ট পেশ করে পুলিশ। উল্লেখ্য, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী উপনির্বাচনে কর্মরত পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো নীতিভঙ্গের অভিযোগ আনা যায় না। তাই এ ব্যাপারে দোষী প্রমাণিত হলেও ভগবান সিং ও তার সাগরেদের শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top