সকল মেনু

‘বুলেট’ ট্রেন লাইন নির্মাণে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী

 স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: জাপানের দ্রুত গতির ট্রেন বুলেট ট্রেনেরে আদলে বাংলাদেশেও বুলেট ট্রেন বা ম্যাগনেটিক ট্রেন লাইন নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে আপাতত ভারত ও চীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দ্রুত গতির রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী বুলেট ট্রেন নির্মাণের  ইচ্ছার কথা সংশ্লিদের জানিয়েছেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দ্রুত গতির রেল লাইন গড়তে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। যাতে করে দ্রুত গতির ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়। একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ যেভাবে চলাচল করছে আমাদেরও একইভাবে চলতে হবে। তারা দ্রুত গতিতে চলছে আর আমরা যদি ধীর গতিতে চলি তাহলে তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসার প্রসার ঘটানো যাবে না।

একনেক সভায় আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডাবল রেল লাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেল লাইনের মানোন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটি অনুমোদন দেননি প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডাবল রেল লাইন নির্মাণ, ৭২ কিলোমিটার রেল লাইন মেরামত এবং কম্পিউটার বেজড সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে লাইনের মানোন্নয়ন এবং সেকশনাল ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-চট্রগ্রাম-চট্রগ্রাম করিডর যাত্রী ও মালামাল পরিবহণের চাহিদা মেটানোর জন্য ডাবল লাইনের প্রয়োজন। ঢাকা-চট্রগ্রাম রেলওয়ে লাইন বাংলাদেশ রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ সেকশনটি ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে এবং উপ-আঞ্চলিক করিডোরের একটি বড় অংশ।

এ উপ-অঞ্চলে পরিবহন এবং ট্রান্স-শিপমেন্টের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশের রয়েছে। এর সীমান্তে রয়েছে ভারত ও মায়ানমার এবং ভুটান ও নেপাল সীমান্তের কাছে অবস্থিত। যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু এবং ঢাকা-চট্রগ্রাম রেলওয়ে করিডর দিয়ে বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী দেশসমূহকে চট্রগ্রাম পোর্টের মাধ্যমে মালামাল পরিবহণ সুবিধা দিতে পারবে। এর মাধ্যমে এদেশে দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (ইআইবি) ঋণ সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা।  প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবি ও ইআইবির ঋণ সহায়তা ধরা হয় ৪ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা এবং সরকারি অর্থায়ন ধরা হয় ৯৭১ কোটি টাকা।

জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০২০ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়। প্রকল্প এলাকা কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, কুমিল্লা সদর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও লাকসাম। অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কসবা উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। যাতে করে ঢাকা-চট্রগ্রাম পযর্ন্ত আপাতত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রেল পথ নির্মাণ করা যায় সেই বিষয়ে নজর দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই জন্য নতুনভাবে পরিকল্পনা করে পরবর্তী কোনো এক একনেক সভায় প্রকল্পটি উপোস্থাপন করা জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, জাপানের আদলে বাংলাদেশে বুলেট ট্রেন লাইন নির্মাণের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চায়নার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রেল পথ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নিতে বলেছেন।

একনেক সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম,প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,  পানি সম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান

খান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ. মান্নান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জাপানে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৪৩০ কিলোমিটার দ্রুতগামী ট্রেনের মডেল হিসেবে যোগ দিয়েছে বুলেট ট্রেন। বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত ট্রেন চলে ফ্রান্সে, যার গতি ঘণ্টায় ৫৭৫ কিলোমিটার, তারপর চীনে ৪৮৬ কিলোমিটার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top