সকল মেনু

বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে প্রধান কণ্ঠস্বর, হাসিনা বিগ ভয়েস

 হটনিউজ ডেস্ক,ঢাকা: জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন চলাকালে ভিতরে ও বাইরে এবার বাংলাদেশ উপস্থাপিত হবে এক সাফল্যের উদাহরণ হিসেবে। অধিবেশনের বিভিন্ন ফোরামে এবং অধিবেশনের বাইরের আয়োজনেও বাংলাদেশকে ‘সাকসেস স্টোরি’ হিসেবে তুলে ধরা হবে। এছাড়া সাধারণ অধিবেশনের আগে জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্ববানে যে জলবায়ূ সম্মেলন হতে যাচ্ছে তাতেও বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে প্রধান কণ্ঠস্বর। বিশ্বের ১২০টিরও বেশি রাষ্ট্রের সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান এবারের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন। তাদের অনেকেরই কাছে বাংলাদেশ হবে অন্যতম আকর্ষণ। অনেক সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবার তাকিয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে।

২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই দুটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।

দারিদ্র বিমোচন, শিশুমৃত্যু হার রোধ, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি তার কৌশল জানতে বিশ্ব নেতারা যেমন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতার অপেক্ষায় থাকছেন, তেমনি তাদের অনেকেই চাইছেন এবারের জলবায়ূ সম্মেলনে বাংলাদেশই হবে ‘বিগ ভয়েস’। সবচেয়ে অগ্রসর ও জোরালো ভূমিকাটিও থাকবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

এসব কথা  জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন। নিউইয়র্ক থেকে টেলিফোনালাপে ড. মোমেন জানান, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের ৪০ বছর পূর্তি হচ্ছে এবার। আর সে কারণেই এবারের অধিবেশনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবজ্জ্বল অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ড. মোমেন জানান নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। ওই একই দিন বিকেলে নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বক্তৃতা রাখারও কর্মসূচি চূড়ান্ত।

গ্লোবাল সিটিজেন ফেস্টিভাল-২০১৪’র এই আয়োজনে বিশ্বের কয়েক ডজন দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানরা অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখবেন। এরই মধ্যে জানানো হয়েছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশকে সাকসেস স্টোরি হিসেবে উপস্থাপন করা হবে এই গ্লোবাল সিটিজেন ফেস্টিভালে।

ড. মোমেন বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন হতে চলেছে। গোটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নাগরিকরা এই উৎসবে যোগ দেবেন। যাদের কাছে অন্যতম আকর্ষণই হয়ে থাকবে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা।

৬০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতার সেন্ট্রাল পার্কে এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের যারা অংশ নিতে চান তাদের এখনই অনলাইনে http://www.globalcitizen.org এই ঠিকানায় রেজিস্ট্রেশন করতে হবে বলেও জানান তিনি।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের বাইরে সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবছরের মতো এবারের বেশ কয়েকটি দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন। তবে ঠিক কোন কোন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হচ্ছে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান ড. মোমেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক হচ্ছে কি না এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উভয় পক্ষ থেকে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতার একই দিনে ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া বিকেলে সেন্ট্রাল পার্কের গ্লোবাল সিটিজেন ফেস্টিভালেও নরেন্দ্র মোদী বক্তৃতা করতে পারেন বলে জানানো হয়েছে।

কোন কোন দেশের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক হতে পারে এমন প্রশ্নে ড. মোমেন জানান, প্রতিবেশি দেশগুলোর বাইরে যেসব দেশে বাংলাদেশের বড় সংখ্যায় শ্রমিক রয়েছে এবং যাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে তাদের এক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ড. মোমেন বলেন, মালয়েশিয়া ও সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতারসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানরা সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গেলে তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করার সুযোগ থাকবে।

সাধারণ অধিবেশনের পাশাপাশি জাতিসংঘ মহাসচিবের আহবানে ২৩ সেপ্টেম্বরের জলবায়ূ সম্মেলনটিও হতে যাচ্ছে এবারের অন্যতম কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতে যাচ্ছেন প্রধান কণ্ঠস্বর।

ড. মোমেন জানান, গত ১ থেকে ৪ সেপ্টেম্বর দ্বীপরাষ্ট্র সামওয়াতে জলবায়ূ সংক্রান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং তিনি নিজেও যোগ দেন।

ছোট ছোট দ্বীপ দেশগুলোর জলবায়ূ সমস্যা নিয়ে জাতিসংঘের এই আয়োজনেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশ নেন।

বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল সেখানে ৩৮টিরও বেশি দেশের সরকার কিংবা রাষ্ট্র প্রধান কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন।

ড. মোমেন জানান, এই আলোচনায় জলবায়ূ পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ও অন্যতম ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলোর পক্ষ থেকে ‍বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দিকেই তারা তাকিয়ে আছেন।

কেবল দ্বীপ বা সবচেয়ে হুমকির মুখে থাকা দেশগুলোর পক্ষ থেকেই নয় উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকেও একই ধরনের বক্তব্য এসেছে বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ও জলবায়ু সম্মেলনে কাঙ্খিত ভূমিকা রাখতে পারেন এবং সকলের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন সে লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ড. মোমেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top