সকল মেনু

চাকরি জাল সনদে: অনুসন্ধানে দুদক

 শানজানা জামান : শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এজন্য শিগগিরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে বলে দুদকের একটি সূত্র রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি জানায়, পরিচালনা পর্ষদ লোকবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলেও সেখানে যোগ্য প্রার্থীদের স্থান হয়নি। যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ না দিয়ে নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং সনদপত্র না থাকা সত্ত্বেও অনেক জাল সনদধারী প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে দ্রুত পদোন্নতিরও ব্যবস্থা করেছে ব্যাংকটির পর্ষদ। বিশেষ করে, ভুয়া সনদপত্র দিয়ে বর্তমান পর্ষদের চেয়ারম্যানের আপন দুই বোন সোনিয়া সুলতানা (আইডি নম্বর ৬২) ও জিনিয়া সুলতানা (আইডি নম্বর ৮৭) চাকরি নিয়েছেন। বাকি ২৫ জন প্রার্থীও অন্যান্য পরিচালকের আত্মীয়স্বজন। এদের মধ্যে অনেকেই ভুয়া সনদধারী বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগকৃত আত্মীয়দের অবৈধভাবে পদোন্নতিও দিয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংকটির কার্যক্রম পরিচালনায় পরিচালনা পর্ষদের অনীহার কারণে বিগত ২০১০-১১ সালে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার পর থেকে ক্রমান্বয়ে লভ্যাংশের অবনতি ঘটছে।

ব্যাংকটির বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ হচ্ছে- বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি ও কোম্পানি মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেলস অনুসারে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের সব শেয়ার ব্যাংকের কাছে জমা রাখার কথা। সেখানে নিজেদের শেয়ারগুলো অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করেছেন পর্ষদ সদস্যরা। এতে আইনগতভাবে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য থাকার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কমিশনার (অনুসন্ধান) এ অভিযোগ অনুসন্ধানের অনুমোদন দিতে পারেন।’

অভিযুক্ত ভুয়া ২৫ সনদধারী হলেন : শাহজালাল ইমলামী ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় শাখার সিনিয়র অফিসার মো. আবদুল্লাহ আল আমিন (আইডি নং-১৩১৯), সিলেট শাখার অফিসার মো. নুরুল ইসলাম (আইডি নং-২০৩৮), ব্যাংকের প্রধান শাখার অ্যাসিসট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. মনিরুল ইসলাম (আইডি নং-৮১৪), বিজয়নগর শাখার সিনিয়র অফিসার মো. রিয়াদুল ইসলাম (আইডি নং-১০৬৬), উত্তরা শাখার জুনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট সোনিয়া সুলতানা (আইডি নং-৬২), কলেজ গেট শাখার অফিসার (ক্যাশ) তপন কুমার সাহা (আইডি নং-১০০৬), উত্তরা শাখার ফাস্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার জিনিয়া সুলতানা (আইডি নং-৮৭), ধানমন্ডি শাখার শিক্ষানবিশ অফিসার (ক্যাশ) মো. বদরুল হক (আইডি নং-২১৫১), মহাখালী শাখার শিক্ষানবিশ অফিসার (ক্যাশ) মো. শরিফুল ইসলাম (আইডি নং-২১৩৪), বেড়াচওড়া শাখার সিনিয়র অফিসার (ক্যাশ) মো. রফিকুল ইসলাম (আইডি নং-৬৩৫), করপোরেশন শাখার ব্যবস্থাপনা শিক্ষানবিশ অফিসার মো. আলাউদ্দিন (আইডি নং-১৯৫২), নওয়াবপুর শাখার জুনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. রেজাউল হাসান (আইডি নং-২৫১), প্রধান শাখার আর্থিক প্রশাসন ডিভিশনের সিনিয়র অফিসার বিল্লাল রাসেল (আইডি নং-১৮৫৬), বংশাল শাখার অফিসার (ক্যাশ) মো. ফারহানা সুলতানা (আইডি নং-১৫৩২), কলেজ গেট শাখার অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন (আইডি নং-১২৭৬), বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় শাখার অফিসার (ক্যাশ) মো. মাসুদ করিম খান (আইডি নং-৭৬৩), মতিঝিল শাখার অফিসার (ক্যাশ) মো. আফসার হোসাইন (আইডি নং-১৬৭৭), ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ইমরান হোসেন (আইডি নং-২৮৭), মিডফোর্ড শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইদুর রহমান (আইডি নং-৬৯), বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় শাখার ফাস্ট অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মসিউজ্জামান (আইডি নং-২৪২), ব্যাংক ফাউন্ডেশনের অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল আহমেদ (আইডি নং-৯৫), টঙ্গী এসএমই শাখার অফিসার (ক্যাশ) মো. জিয়াউর রহমান (আইডি নং-১৭১৪), রামগঞ্জ শাখার অফিসার মো. নজরুল বিশ্বাস (আইডি নং-২১১৬), গুলশান সাউথ অ্যাভিনিউ শাখার অফিসার (ক্যাশ) মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (আইডি নং-১৮৮৫) ও বংশাল শাখার শিক্ষানবিশ অফিসার (ক্যাশ) সালেহ আবু নাহিদ (আইডি নং-২০৩১)।

এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সভাপতি ও ব্যাংকটির চেয়ারম্যান এ কে আজাদ হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি গোষ্ঠী এ ধরনের অভিযোগ তুলছে। এর কোনো ভিত্তি নেই। যাদের বোন বলা হচ্ছে আসলে তারা আমার বোন নয়।’

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা হলেন : চেয়ারম্যান এ কে আজাদ, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস, মো. আবদুল বারেক, পরিচালক সাজেতুজ জুম্মা, আনোয়ার হোসাইন খান মোহাম্মদ ফারুক, তোফাজ্জল হোসেন, মো. সানাউল্লাহ শহীদ, মো. হারুন মিয়া, মো. ফররুখ, মো. সোলায়মান, সৈয়দ নজরুল আরেফিন, আবদুল হালিম, মহিউদ্দিন আহমেদ, আক্কাস উদ্দিন মোল্লা, খোন্দকার সাকিব আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌহিদুর রহমান, মোশাররফ হোসাইন, স্বাধীন পরিচালক ফরিদা পারভীন নুরু ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরমান আর চৌধুরী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top