সকল মেনু

বাবার বকুনিতে পালিয়ে ১৭ বছর

 ডেস্ক রিপোর্ট : বাবার বকুনিতে সেই যে পালিয়ে গেল ছেলে, বাড়ি ফিরে এল ঠিক ১৭ বছর পর। ঘটনাটি ভারতের মালদহের। ছেলের নাম ওয়াহেদ। মালদহের রতুয়ায় চাঁদমনি এলাকার হলদিবাড়ি গ্রামের দুধ ব্যবসায়ী জুব্বের আলীর সন্তান। ছয় ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে ওয়াহেদই বড়। ওয়াহেদের বয়স তখন ১৬। বাজারে দুধ বিক্রি করতে যেতে না চাওয়ায় বকাবকি করেন বাবা জুব্বের। অভিমানে সে রাতেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ওয়াহেদ। তারপর কয়েক মাস ছেলের খোঁজ করলেও সন্ধান মেলেনি। একসময় ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশাও ছেড়ে দেন জুব্বের আলী। ১৭ বছর পর ৩৩ বছরের ওয়াহেদ বাড়ির উঠানে এসে দাঁড়ান। মাত্র দুপুর গড়িয়েছে। বাবা জুব্বের আলী তার গরু-মহিষের পরিচর্যায় ব্যস্ত। মা জারেখা বিবি মাত্র রান্না সেরেছেন। আচমকা জারেখা বিবির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘মা আমি ওয়াহেদ।’ এক পলক দেখেই এতগুলো বছর পরও পালিয়ে যাওয়া ছেলেকে চিনতে মোটেই অসুবিধা হয়নি বৃদ্ধ দম্পতির। তারপরের দৃশ্যগুলো বলার নয়, শুধুই অনুভবের।

এর মাঝে ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে ঘটেছে কতইনা ঘটনা। বছর চারেক আগে পাশের দেবীপুর গ্রামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে শুনে জুব্বেররা গিয়ে হাজির হন। ওই যুবকের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া ছেলের মুখের সাদৃশ্য রয়েছে দেখে তাকেই ছেলে ভেবে বাড়িতে নিয়ে আসেন জুব্বের। তাকে ওয়াহেদ বলে ডাকতেনও তারা। এ দিন বুঝতে পারলেন, সেই যুবক তাদের হারিয়ে যাওয়া ছেলে নয়।

জারেখা বিবি বললেন, ‘আজ আমার খুব খুশির দিন। এক ছেলেকে হারিয়েছিলাম। দুই ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। দুই ওয়াহেদকে নিয়েই থাকব।’ জুব্বের বলেন, ‘চার বছর আগে দেবীপুরে ওই যুবককে দেখে নিজের হারানো ছেলে বলেই মনে হয়েছিল। ভেবেছিলাম ১৩ বছরে মুখের আদল হয়তো কিছুটা পাল্টেছে। তখন থেকে ও আমাদের কাছেই রয়েছে। ওয়াহেদকে ফিরে পেয়ে আরো ভালো লাগছে।’

পালিয়ে যাওয়ার পর ওয়াহেদকেও পোড়াতে হয়েছে অনেক কাঠখড়। বাড়ি থেকে পালিয়ে ট্রেনে চেপে প্রথমে কাশ্মীরে গিয়ে একটি হোটেলে কাজ নেন। কয়েক মাস পরে মুম্বাই গিয়ে একটি ক্যাটারিং সংস্থায় কাজ শুরু করেন। বছর চারেক আগে বিয়েও করেছেন। তিন বছরের এক সন্তানও রয়েছে তার।

ওয়াহেদ জানান, সব সময় তার বাড়ির কথা মনে পড়ত। কিন্তু পালিয়ে গিয়েছিলেন বলে ফিরতে ভয় পেতেন। ওয়াহেদ বলেন, ‘ভাবতাম বাবা যদি ফের তাড়িয়ে দেন। আর এখন থাকতে না পেরেই বাড়ি ফিরেছি।’

সূত্র : আবাপ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top