সকল মেনু

ভোলায় ৪০ গ্রাম প্লাবিত কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ

 ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় দ্বিতীয় দিনের মতো মেঘনার পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তলিয়ে গেছে তিন উপজেলার ৪০ গ্রাম। তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। ঈানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পূর্ণিমায় সৃষ্ট জোয়ারের প্রভাবে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার নিন্মাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে এসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তারা আরো জানান, শনিবার মেঘনায় বিপদ সীমার ৩.৮০ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও রোববার এর পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, রোববার দুপুরে জেলার দৌলতখান, মনপুরা ও চরফ্যাশনের ৫টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ওই গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ।  প্লাবিত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে- দৌলতখানের বিচ্ছিন্ন ইউনিয়নের হাজিপুর ইউনিয়ন, চরফ্যাশনের ঢালচর ইউনিয়নের দালালপুর, হাজিপুর, ভদ্রপাড়া, শান্তিনগর, কেরামতগঞ্জ, শেখ পাড়াসহ ৯টি গ্রাম, কুকরী-মুকরী ইউনিয়নের আমিনপুর, রসুলপুর, শাহবাজপুর,  রহমানপুর ও চরপাতিলাসহ ৯টি গ্রাম, মুজিবনগর ইউনিয়নের ৭টি গ্রাম ও মনপুরার উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া, উত্তর সাকুচিয়া, মনপুরা ও হাজিরহাট ইউনিয়নের চরজ্ঞান, সোনার চর, চর মরিয়ম ও দাসেরহাট গ্রাম। এসব এলাকার মধ্যে কোথাও কোথাও বাঁধ নেই, আবার কোথাও ভাঙ্গা বাঁধ মেরামত হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণ না করায় পানিবন্দী হয়ে চরম দুভোর্গ পোহালেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাদ্রাসা শিক্ষক নান্নু মাতাব্বর বলেন, শনিবারের তুলনায় রোববার অস্বাভাবিকভাবে জোয়ারের চাপে ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে পানির চাপে বিধ্বস্ত হয়েছে অর্ধশতাধিক কাঁচাঘর। কুকরী-মুকরী ইউপি সদস্য আব্দুল সালাম বলেন, জোয়ারে কুকরী-মুকরী অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন মানুষ। পানির হাত থেকে বাঁচতে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। দৌলতখান হাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, হাজিপুর ইউনিয়নের দেড় হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় মানুষ পানিবন্দী হয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এলাকার মানুষের জন্য সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, এখানকার কৃষকের ক্ষেতের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ভেসে যাচ্ছে পুকুর ও ঘের। মনপুরা উপজেলার স্কুল শিক্ষক আব্দুল্লাহ জুয়েল বলেন, উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। দুই দিন ধরে জোয়ারের পানিতে ৪০টি গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দিন মজুরের পরিবারে দেখা দিয়েছে খ্যাদ্যাভাব। ঘর বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অনেক পরিবারের ঘরে চুলো জ্বলছে না। জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীত কৃষক। অন্যদিকে পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে যাওয়ায় নি:স্ব হতে চলছেন উপকূলের এসব মানুষ। অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার কারনে পানি বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাগ দেখা দিয়েছে।এ ব্যাপারে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম বলেন, শনিবার মেঘনার পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। রোববারও অস্বাভাবিকহারে জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে নিচু এলাকা। তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু স্থানে বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। জোয়ারের পানির কারণে বাঁধ নির্মাণে বিঘ্ন ঘটছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top