সকল মেনু

ডিসেম্বরে সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র

  আছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম : গভীর ও অগভীর সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য আগামী ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর। ভারতের আপত্তি থাকায় এত দিন গভীর ও অগভীর সমুদ্রের ৯টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা যায়নি। তবে গত ৭ জুলাই নেদারল্যান্ডসের দি হেগে স্থায়ী সালিশি আদালত বা পারমানেন্ট কোর্ট অব আরবিট্রেশন (পিসিএ) বঙ্গোপসাগরের সীমা, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মহীসোপানের তলদেশে সার্বভৌম অধিকার নিয়ে যে রায় দিয়েছেন, তাতে এ জটিলতার অবসান হয়েছে। রায়ে দুদেশের বিরোধপূর্ণ সমুদ্রসীমার ২৫ হাজার ৬০২ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ১৯ হাজার  ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার পেয়েছে  বাংলাদেশ। সাগরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশ যে ব্লকগুলো তৈরি করেছে এর মধ্যে ৫, ৬, ৯, ১০, ১৪, ১৫, ১৯, ২০, ২৪, ২৫ নম্বর ব্লকে নিজেদের অংশ রয়েছে বলে দাবি করে আসছিল ভারত। এ রায়ের ফলে ১, ৫, ৯, ১৪,১৯ ও ২৪  নম্বর ব্লকের কিছু অংশ  (প্রায় ১০ শতাংশ) পেয়েছে ভারত । এখন এ ১০টি ব্লকের মধ্যে ৯টির আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। শনিবার পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হটনিউজ২৪বিডি.কম কে বলেন, বিরোধপূর্ণ ব্লকগুলোতে এত দিন আমরা দরপত্র আহ্বান করিনি। এখন রায় আমাদের পক্ষে এসেছে। তাই এসব ব্লকের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করার কাজ শুরু করেছি।

চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর বলেন, আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের আগেই আমারা দরপত্রের টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশনে কিছু পরিবর্তন আনব। কেননা পার্শবর্তী দেশ মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় তেল গ্যাস অনুসন্ধানে তাদের যে টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন  রয়েছে তা খুবই অর্কষণীয়। তাদের (মিয়ানমার) তুলনায় আমাদের দরপত্রের শর্তে রয়েছে অনেক জটিলতা। তাই আমরাও কিছু কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনব । এতে আগ্রহী হবেন বিনিয়োগকারীরা।

ড. হোসেন মনসুর বলেন, টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশন ঠিক করতে শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আমরা বৈঠকে বসব। এরপর  বৈঠকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এ সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই আমরা নতুন বিডিংয়ে যাব।

পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, গভীর সমুদ্রের ১০ নম্বর ব্লকের কিছু অংশ ভারত দাবি করায় ২০০৮ সালে ওই অংশটুকু বাদেই আর্ন্তজাতিক দরপত্র আহ্বান কর হয়। এ ব্লকে এখন তেল গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি কনোকোফিলিপস। এখানে প্রচুর পরিমাণে গ্যাস মজুদ রয়েছে বলেও তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। এই রায়ের ফলে গভীর সাগরের ১০ নম্বর ব্লকটিতে সম্পূর্র্ণ অধিকার পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন গভীর সমুদ্রে সাতটি এবং অগভীর সমুদ্রের দুইটি ব্লকে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে।

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, এত দিন বিরোধের কথা বলে বিদেশি কোম্পানিগুলো তেল গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী হতো না। এ রায়ের ফলে জটিলতার অবসান হয়েছে। এখন সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়া যাবে। কেনান সাগরের বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো এ দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে

বর্তমানে গভীর সমুদ্রের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লকে কাজ করছে কনোকোফিলিপস। তেল গ্যাস অনুসন্ধানে ২০১১ সালের ১৬ জুন মার্কিন এ কোম্পানির  সঙ্গে পিএসসি স্বাক্ষর করে পেট্রোবাংলা। আর এ জন্য ২০০৮ সালের ১৫ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তেল গ্যাস অনুসন্ধানে সাগরের গভীর ও অগভীর অংশের মোট ১২টি ব্লকের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর। ওই সময় তিনটি ব্লকের জন্য দরপত্র জমা দেয় মাত্র দুটি কোম্পানি। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি কনোকোফিলিপস এসএস ৭ ব্লকের এবং ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশনের (ওএনজিসি) এসএস ৪ ও ৯-এর জন্য দরপত্র জমা দেয়। ফের দ্বিতীয় দফায় গত বছরের ২৮ মে অগভীর সাগরের ছয়টি ব্লকের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই সময় শুধু ১১ নম্বর ব্লকের জন্য যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি সান্তোস ও সিঙ্গাপুরের ক্রিস এনার্জি দরপ্রস্তাব জমা দেয়। ইতিমধ্যে ওএনজিসি, সান্তোস ও ক্রিস এনার্জির সঙ্গে পেট্রোবাংলার পিএসসি চুক্তি হলেও কনোকোফিলিপসের সঙ্গে চুক্তি হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top