সকল মেনু

প্রযুক্তি শিল্পের পার্টস ও কাঁচামাল রপ্তানির প্রস্তুতি ওয়ালটনের

 নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রযুক্তি শিল্পের বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ, পার্টস ও কাঁচামাল রপ্তানির পরিকল্পনা করছে ওয়ালটন। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় ব্যবহারের জন্য ব্যাপকভাবে পার্টস ও কাঁচামাল তৈরি করতে যাচ্ছে আর.বি. গ্রুপের এই প্রতিষ্ঠান। অবশ্য অনেক আগে থেকে নিজেরাই মোল্ড তৈরি করছে ওয়ালটন।বাংলাদেশে ওয়ালটন ফ্রিজ, টিভি, এয়ারকন্ডিশনার ও মোটরসাইকেলের মতো বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও অটোমোবাইল পণ্য তৈরি করছে। এতোদিন এসব পণ্যের কাঁচামাল ও মেশিনারিজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো। সম্প্রতি এসব পণ্য তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এবং মেশিনারিজ, পার্টস দেশেই তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েও দেশের অন্যান্য শিল্প কারখানার জন্য এসব পার্টস ও কাঁচামাল সরবরাহ করবে ওয়ালটন। পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানিরও প্রস্তুতি চলছে। ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর (সোর্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং) প্রকৌশলী আশরাফুল আম্বিয়া জানান, ওয়ালটনের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের শিল্প অগ্রগতির একটি মাইলফক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, এদেশের উদ্যোক্তারা কাঁচামালের জন্য বিদেশনির্ভর। এর ফলে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। অথচ নিজেরা এটা করতে পারলে বৈদিশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়, পণ্যের দাম কমে যায় এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। তিনি যোগ করেন, বাংলাদেশে শ্রমের মূল্য অপেক্ষাকৃত কম। আবার এসব অনেকাংশে শ্রমনির্ভর। ফলে এসব মেশিনারিজ ও কাঁচামাল তৈরিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যত অতি উজ্জ্বল। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, ওয়ালটন কারখানায় ব্যাপক আকারে কাস্টিং প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলছে। এতে স্টিল, কপার ও এ্যালুমিনিয়াম সহযোগে তৈরি হবে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। ওয়ালটন তৈরি করতে যাচ্ছে পলিউল। রেফ্রিজারেটরের ভেতরে ইনস্যুলেশন তৈরিতে এই কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়। প্ল্যান্ট বসানোর কাজ চলছে। আগামি এক মাসের মধ্যে দেশের প্রথম পলিউল মেকিং প্ল্যান্ট চালু হবে। এটি ফ্লেক্সিবল ফোম ইন্ডাস্ট্রিতেও সাপ্লাই দেয়া যাবে। ম্যাট্রেস, ফোম, সোফা, গদি ইত্যাদি তৈরিতে এই কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়।  বসছে হট মেল্ট গ্লু প্ল্যান্ট। ফ্রিজের ভেতরে সিলিং করতে লাগে হট মেল্ট গ্লু। এই কেমিক্যাল ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিতে বিপুল পরিমানে ব্যবহৃত হয়। প্যাকেজিং কারখানা এবং ডায়াপার তৈরিতেও লাগে। পিভিসি কম্পাউন্ডিং প্ল্যান্টে তৈরি হবে হার্ড এবং সফট দুই ধরনের কেমিক্যাল। পিভিসি (প্লাস্টিক) কম্পাউন্ডিং প্রসেসে এটি ব্যবহৃত হয়। তৈরি হবে পিএসএ (প্রেসার সেনসেটিভ এ্যাডহেসিভ); এটি মূলত উচ্চ মানের আঁঠা। যা এ্যাডহেসিভ ইন্ডাস্ট্রিতে লাগে। ওয়ালটনের পরবর্তী প্রজেক্ট কালার মাস্টারব্যাচ ও বেস পলিউল প্ল্যান্ট। উচ্চমানের আকর্ষণীয় প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনে মাস্টারব্যাচ ব্যবহৃত হয়। বেস পলিউল হচ্ছে একধরনের মৌলিক কাঁচামাল যা উচ্চ প্রযুক্তির এ্যাডভান্স র’ ম্যাটেরিয়ালস হিসেবে স্বীকৃত।  ওয়ালটনরে পার্টস কম্পোনেন্টস প্রজেক্টে তৈরি হচ্ছে অনেক কিছুই। যার মধ্যে থাকছে ড্রায়ার ফিল্টার, এ্যাকুমুলেটর, বিভিন্ন ধরনের স্যুইচ, কানেক্টর, লোগো, ইভাপোরেটর কন্ডেন্সার, প্লাস্টিক শিট, রাবার ম্যাগনেট, প্যাকিং বেল্ট, লক এন্ড কি, হিঙ্গস, ইলেকট্রনিক্স কন্ট্রোল সিস্টেম, এলইডি লাইট ইত্যাদি। পার্টস কম্পোনেন্টস অংশের পরবর্তী প্রজেক্টে তৈরি হবে জিঙ্ক কোটেড স্টিল টিউব, সব ধরনের স্ক্রু এবং পেপার মেকিং প্ল্যান্ট।   ওয়ালটনের গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ জানিয়েছে, ২০১৫ সালের মধ্যে উল্লিখিত যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালের সবগুলোই তৈরি হবে বাংলাদেশে। এর আগে পর্যায়ক্রমে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাট বসানোর কাজ চলবে। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশ শিল্পায়নের ক্ষেত্রে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top