সকল মেনু

ফেইসবুকে ভুয়া আইডি খুলে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হয়রাণী

 নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, চাঁদপুর:  তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনকে সহজ করে তুললেও কিছু সংখ্যক মানুষ কর্তৃক এর অপব্যবহার অনেকের জীবনে অভিশাপ ডেকে আনছে।  এর ফলে সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন বিনষ্ট হচ্ছে, ধর্মীয় অনুভ’তি আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। এমন কী কোন কোন ক্ষেত্রে হত্যা ও আতœহত্যার ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে। চাঁদপুরে তথ্য ও প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাত্রা বেড়ে চললেও স্থানীয় পুলিশ বিভাগের কাছে এই ধরনের অপরাধীদের সনাক্ত করার কোন উপকরণ না থাকায় এবং অভিজ্ঞ বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক না থাকায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। সামাজিক যোগায়োগের মাধ্যম হিসেবে ফেইস বুক’কে আখ্যায়িত করা হলেও এখন মানুষ সবচাইতে বেশি হয়রানী ও অপমানের শিকার হচ্ছে এই ফেইস বুকের মাধ্যমে। সাইবার অপরাধীরা হ্যাকিয়েংর মাধ্যমে সমাজের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও মহিলাদের একাউন্টে প্রবেশ করে তাদের ছবি, ব্যক্তিগত ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছে। তাছাড়া ওই ব্যক্তির অজ্ঞাতে তার একাউন্ট থেকে বিভিন্ন ধরনের অরুচিকর, বিভ্রান্তিমূলক ও যৌন আবেদনমূলক বিভিন্ন ম্যাসেজ বা স্ট্যাটাস দিচ্ছে।  যার কারণে পরবর্তীতে একাউন্টের মালিককে নানা ধরনের হয়রাণী, অপপ্রচার, বিব্রতকর ও অসম্মাণজনক পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। কখনো কখনো আইনি বিভিন্ন ঝামেলায়ও পড়তে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ ফেইস বুকের মাধ্যমে সমাজের প্রতিষ্ঠিত এবং সম্মাণিত বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ত্ব গড়ে তুলে পরবর্তীতে বিভিন্ন অন্যায় ও অযৌক্তিক অনুরোধ বা আবদার করছে। দাবি করছে টাকা-পয়সা। আর তার দাবির সাথে সম্মত হতে অসম্মত হলেই তার নাম করে, তার ছবি, কর্মস্থল, বাসস্থান এর ঠিকানা, মোবাইল নম্বর এবং ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য ব্যবহার করে স্বতন্ত্র ভুয়া একাউন্ট খুলে বিকৃত, অশ্লীল বিভিন্ন স্ট্যাটাস ও ম্যাসেজ দিয়ে তাকে সামাজিকভাবে হেয় ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। চাঁদপুরের বহু মানুষের নামে ফেইস বুকে এমন একাধিক একাউন্ট খুলে তাদের সামাজিক ও মানসিক অস্থিরতার মধ্যে ফেলা হয়েছে। লোকজানাজানি, লজ্জা ও অপমানের ভয়ে এসব বিষয় কাউকে বলাও যাচ্ছে না। এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন করার পরও কোন লাভ হচ্ছে না। অনেকে শেষ পর্যন্ত উপায় না পেয়ে পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য যায়। কিন্তু চাঁদপুর জেলা পুলিশের কাছে এই ধরনের অপরাধীদের সনাক্ত করার কোন উপকরণ, দক্ষ বা প্রশিক্ষিত লোকবল না থাকায় তারাও কিছু করতে পারছে না। আবার কিছু সংখ্যক অপরাধী রয়েছে যারা মেয়েদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে পরে তাদের যৌনতায় বাধ্য করে সেইসব দৃশ্য ভিডিও করে তা ফেইস বুকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে ওই মেয়েটির আতœহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় থাকছে না। আবার বিকৃত ও যৌনতাপূর্ণ  কোন ছবির সাথে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবি পেষ্ট করে তাদের ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে। এরপর আপস করার জন্য মোবাইলে বা ই-মেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন বার্তা পাঠানো হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে নানান হুমকি ধমকি।
সাইবার অপরাধগুলো যারা করছে তাদের অধিকাংশই বয়সে একেবারে তরুণ এবং বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট সাংবাদিক শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলমের নামে ফেইসবুকে একাধিক এমন বিকৃত একাউন্ট খুলে দীর্ঘদিন ধরে লোকজনদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত  একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র এইসব একাউন্টগুলো খুলে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে যাচ্ছে। ওই যুবক মাকসুদের নামে ভ’য়া এসব একাউন্ট খোলার পর তাকে ই-মেইল এবং মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে  তার সাথে আপস করার জন্য বহুবার আহ্বান জানায়। কিন্তু তাতে তিনি সম্মত না হওয়ায় সে ওই সাংবাদিকের নামে মানহানিকর নানা অপপ্রচার চালিয়েই যাচ্ছে। তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে সাংবাদিক মাকসুদ তার দীর্ঘদিন ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর পর্যন্ত বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। তিনি তার দীর্ঘদিন ব্যবহৃত ই-মেইল একাউন্ট  পর্যন্ত বদলে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন। এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় জিডি করে এবং পুলিশ সুপার বরাবর বিস্তারিত জানিয়ে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। কয়েক দফায় ওই যুবকের মা বাবাকেও বিষয়গুলো জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোন ফল হয়নি। ফেইস বুক বা ই-মেইল একাউন্ট খোলার কোন কঠোর নিয়ম না থাকায়, হ্যকার ও ভুয়া আইডি পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করেও এবং ভুয়া আইডি সনাক্ত করে এর বিরুদ্ধে বারবার রিপোর্ট দেবার পরও ফেইসবুক ও ই-মেইল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় একের পর এক এমন অপরাধ বেড়েই চলছে। আর মোবাইলে কল ব্লক লিষ্ট থাকলেও ম্যসেজ ব্লক করার ব্যবস্থা না থাকায় অপরাধীরা র্নিদ্বিধায় একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে। আর এর শিকার হয়ে নিরীহ মানুষের জীবন বিষিয়ে উঠছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top