সকল মেনু

নেপালে জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশী ব্র্যান্ড ওয়ালটন

 নিজস্ব প্রতিবেদক: নেপালে জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ওয়ালটন। প্রধানত সাশ্রয়ী মূল্য এবং উচ্চমানের পণ্য হওয়ায় ওয়ালটনের সামনে নেপালের মার্কেটে আধিপত্য বিস্তারের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হযেছে। সেই প্রবল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে পণ্য বিপণনে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে ওয়ালটন। জানা গেছে, বর্তমানে নেপালের বাজারে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটনের ফ্রিজ, টেলিভিশন এবং এয়ারকন্ডিশনার। খুব শিগগীরই নেপালের বাজারে মোবাইলসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করতে যাচ্ছে ওয়ালটন। নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (ট্রেড প্রমোশন এন্ড কালচার) খান মোঃ মইনুল হোসেন বলেন, নেপালের বাজারে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় পণ্য এখন ওয়ালটন। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ওয়ালটন পণ্যের দাম তুলনামূলক অনেক কম। বাজারে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী এলজি এবং স্যামসাং ব্র্যান্ডের পণ্যের চেয়ে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্যমূল্য খুবই কম। আবার মানের দিকে থেকে ওয়ালটন খুবই ভালো। সবমিলিয়ে ওয়ালটনের সামনে সুযোগ রয়েছে এখাতে নেপালের মার্কেটে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের। তিনি আরো বলেন, ‘বিনা শুল্কে নেপালে পণ্য প্রবেশের ব্যপারে খুব শিগগিরই নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। সেখানে আমরা ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্যের (ওয়ালটন যেসব পণ্য তৈরি করছে) শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছি। সেটা হলে ওয়ালটন পণ্যের দাম আরো কমে যাবে।’ খান মোঃ মইনুল হোসেন জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নেপালে ১৭৪ টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চাওয়া হয়েছে। নেপাল সরকার ৭৪ টি পণ্যের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে তালিকা আরো বাড়ানোর। অন্যদিকে বাংলাদেশ নেপালকে ১০৮ টি পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিতে রাজি আছে। দুপক্ষের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা শেষে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ফেডারেশন অব নেপাল চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সদ্য সাবেক সভাপতি সুরাজ ভাদিয়া বলেন, নেপালে ওয়ালটন পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখানে নতুন পথচলা শুরু করেছে ওয়ালটন। ওয়ালটন তার পণ্যের বর্তমান মান ধরে রাখতে পারলে অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারবে। জানা গেছে, ভারত বা অন্যদেশ থেকে নেপালে পণ্য গেলে পরিবহন ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। ফলে পণ্যের দাম পড়ে যায় বেশি। কিন্তু ভারত সরকার কাঁকরভিটা ট্রানজিট অনুমোদন করার ফলে বাংলাদেশ থেকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নেপাল তথা রাজধানী কাঠমুন্ডুতে পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে সহজেই নেপালের মার্কেটে জায়গা করে নেয়ার। নেপালে ওয়ালটনের সোল ডিস্ট্রিবিউটর রিডা ইনকরপোরেটেড প্রাইভেট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সরফরাজ আনসারি বলেন, নেপালের জনগণ ওয়ালটন পণ্য নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। সাশ্রয়ী মূল্য এবং উচ্চমান এর প্রধান কারণ। তাছাড়া ওয়ালটন পণ্যে কালার এবং মডেল বৈচিত্র এতো বেশি যা অন্য কোনো ব্র্যান্ডে নেই। এবিষয়গুলি নজর কেড়েছে নেপালের ক্রেতাদের।  তিনি জানান, সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ইতিমধ্যে তারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। নেপালের ৭৫ টি জেলার সবগুলিতে ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় পত্রপত্রিকা এবং টেলিভিশনগুলোতে ধারাবাহিকভাবে বিজ্ঞাপন প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।  সরফরাজ আনসারীর প্রত্যাশা, ওয়ালটন খুব সহজেই নেপালের মার্কেট নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে। কারণ এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য ব্র্যান্ডগুলোর পণ্যমূল্য অনেক বেশি। অথচ সেসব পণ্য ওয়ালটনের চেয়ে অনেক নি¤œমানের। ফলে ওয়ালটন সহজেই তাদের ছাড়িয়ে যেতে পারবে। তিনি জানান, সবগুলো সম্ভাবনা একত্রিত করে তারা একটি সমন্বিত মার্কেটিং প্ল্যান নিয়ে এগোচ্ছেন। নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাস এ ব্যাপারে নানা পরামর্শ দিয়ে তাদের সার্বক্ষনিক সহযোগিতা করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top