সকল মেনু

২২ বিদ্যুৎ বিল বিতরণকারির চাকুরি স্থায়ী হয়নি ৩০ বছরেও

 ইকবাল হোসেন,রংপুর অফিস: মকসুদুল আলম কিরণ। রংপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ বিল বিতরণকারি হিসেবে কাজ করছেন ২২ বছর ধরে। মাসে তিনি পান মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকা। এ টাকা দিয়ে কষ্টে স্ত্রী সন্তান নিয়ে চার সদস্যের সংসার চালাচ্ছেন। ছোট্ট একটি রুম ভাড়া নিয়ে রংপুর নগরীর কামাল কাছনা এলাকায় থাকেন গাদাগাদি করে। দীর্ঘদিনেও তার চাকুরিটি সরকারি করণ করা হয়নি। প্রতিবারই আশ্বাস দেওয়া হয় চাকুরি স্থায়ী করা হবে কিন্তু তার আর হয় না। এভাবেই কেটে গেল জীবনের বেশিরভাগ সময়। তার মত এ ধরনের আরো রয়েছেন ২২ জন। তাদেরও একই অবস্থা। খেয়ে না খেতে তাদের দিন পার করতে হচ্ছে। চাকুরি স্থায়ী করনের দাবিতে বিল বিতরণকারিরা আন্দোলনে যাবার হুমকি দিয়েছেন। চাকুরি স্থায়ী করণ করা না হলে কাজ বন্ধ, বিক্ষোভ সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসুচি পালন করা হবে। আগামী মাস থেকে তারা এ কর্মসুচিতে যাবেন। জানা গেছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ শুরুতে গ্রাহকদের ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিল আদায় করতো স্পট বিলিং সিস্টেমের মাধ্যমে। পরে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্পট বিলিং সিন্টেম পদ্ধতিতে বিল আদায় কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সভায় শ্রমিক নিয়োগের মাধ্যমে মিটার রিডিং, বিল প্রণয়ন, লেজার পোষ্টিং ও বিল বিতরণের কাজ সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় উপজেলা পর্যায়ে বিল বিতরণকারীদের প্রতি বিলে ৭৫ পয়সা হারে দেওয়ার সিন্ধান্ত হয়। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় বোর্ডের আরেক সভায় প্রতি বিল বিতরণে ৭৫ পয়সার পরিবর্তে ১ টাকা ২৫ পয়সা হারে বিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে একজন বিদ্যুৎ বিল বিতরণকারীর বেতন দাঁড়ায় মাসে সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। শর্ত দেওয়ার হয় যারা এ কাজ করবেন তাদের দ্রুত চাকুরি স্থায়ী করণ করা হবে। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও তাদের চাকুরি স্থায়ী না হওয়ায় তাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে, দেখা দিয়েছে হতাশা । রংপুরে নগরের দু’টি ফিডার এলাকায় গ্রাহকের সংখ্যা রয়েছে ৬০ হাজার। ২২ জন বিল বিতরণকারী এই ৬০ হাজার গ্রাহককে বিল প্রদান করছেন। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করে তারা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বিল। রংপুর বিবিবি-১ ও ২ এর অধীনে গ্রাহক রয়েছে নগরের থেকে ১৫ কিলোমিটার দুর পর্যন্ত। বিল বিতরণকারীদের আব্দুল খালেক ও আলা উদ্দিন জানান, তারা এ কাজ করছেন ২৫-৩০ বছর হবে। চাকুরি স্থায়ী করণের আশায় আশায় জীবনটা পার করে দিলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না। এ কাজ করে যে টাকা পাই তা দিয়ে তিন বেলা ঠিকভাবে খাবারই জোটে না। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ কিভাবে বহন করি। প্রতিমাসেই ধার দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে। এভাবে আর কতদিন চলা যায়। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের আন্দোলনে নামতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ বিল বিতরণকারীদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। বিল বিতরণকারীদের স্থায়ী নিয়োগদানের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। দ্রুত কাজ হবে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top