সকল মেনু

চলে গেলেন এবিএম মূসা

ঢাকা, ৯ এপ্রিল (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : দেশের প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা আর নেই।

বুধবার বেলা সোয়া ১টায় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

বেলা ২টা ২২মিনিটে ল্যাবেএইড থেকে তাঁর  মৃতদেহ  ৫/বি ইকবাল রোডে তাঁর বাসায়  নিয়ে যাওয়া হয়। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার সময় তার ছেলে নাসিম মূসা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘জানাযা ও দাফনের  বিষয়ে এখনও আমরা কোন সিন্ধান্ত নেইনি। বাসায় আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’

তিনি দেশবাসীর কাছে তার বাবার জন্য দোয়া চান।

এর আগে ল্যাবএইড কর্তপক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশবরেণ্য এই সাংবাদিকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিনি অনেক আগে থেকে নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তার শরীরের রক্ত স্বাভাবিকভাবে কাজ করছিল না। বারবার রক্ত দেয়ার ফলেও দেহের রক্ত কণিকা ভেঙে যাচ্ছিল। তিনি যে রোগে আক্রান্ত ছিলেন এর নাম নাইলো ডিসপ্লাস্টিক ডিনড্রম। এছাড়া ফুসফুসেও সংক্রমণ এবং হার্টে বাইপাস ও পেসমেকার বসানো ছিল।
তার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক বরেণ চক্রবর্তী।

প্রথিতযশা এই সাংবাদিক বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। গত ২৯ মার্চ তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাত আড়াইটার দিকে তার অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়।

এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ল্যাবএইড হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময় তার শরীরে রক্ত দেয়া হলে তা ভেঙে যেতে থাকে।

এবিএম মূসা জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ক্লাবের আজীবন সদস্য। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে চারবার সভাপতি এবং তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন তিনি।

এবিএম মূসা ১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফের মাধ্যমে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ওই বছরেই তিনি ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় সরকার পাকিস্তান অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি সংবাদে যোগ দেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে রণাঙ্গন থেকে সংবাদ প্রেরণ করতেন এবিএম মূসা। স্বাধীনতার পর তিনি বিটিভির মহাব্যবস্থাপক, মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৮ সালে এবিএম মূসা ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের (এসকাপ) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন। দেশে ফিরে তিনি ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি কিছুদিন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

জনপ্রিয় কলাম লেখক এবিএম মূসা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে আলোচক এবং সংবাদ বিশ্লেষক হিসেবে অংশ নিয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ৮৪ বছরে পা রাখেন প্রবীণ এ সাংবাদিক। ১৯৩১ সালে ফেনীর ফুলগাজী থানার ধর্মপুর গ্রামে খ্যাতিমান এ সাংবাদিকের জন্ম হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top