সকল মেনু

ফিলিপাইন্সে ঐতিহাসিক চুক্তি সই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ২৭ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ফিলিপাইন্সের সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ মোরো ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সই করেছে দেশটির সরকার। একে ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করেছে উভয় পক্ষ।

এ চুক্তি সম্পাদনের ফলে এশিয়ার অন্যতম রক্তক্ষয়ী ও ৪০ বছরের দীর্ঘ সংঘর্ষের অবসান হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশটির রাজধানী ম্যানিলায় রাষ্ট্রপতি ভবনে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো ও মোরো বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতারা।

ফিলিপাইন্স ও মোরো বিদ্রোহীদের মধ্যে চার দশক ধরে চলা সংঘর্ষে এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ মারা গেছেন। ২০০১ সালে দুপক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয় এবং এর পর ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি পালন করেন বিদ্রোহীরা। এর পরে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।

ফিলিপাইন্সের মিন্দানাও দ্বীপে দশকের পর দশক ধরে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে আসছেন কয়েকটি সম্প্রদায়ের অধিবাসীরা। মোরো বিদ্রোহী গোষ্ঠী এর মধ্যে একটি। এ সব বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন মোকাবিলা করতে হয়েছে দেশটির সরকারকে। মিন্দানাওয়ে অধিকাংশ মোরো অধিবাসীরা বাস করেন এবং এখান থেকে তাদের সরকারবিরোধী বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। মোরোরা মুসলমান।

জোলো নামক দ্বীপে বসবাস করে আরেকটি মুসলমান সম্প্রদায়। আবু সায়াফ নামে একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ রয়েছে তাদের। ধারণা করা হয়, আবু সায়াফ আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

এদিকে ১৯৬৯ সাল থেকে সমাজতান্ত্রিক একটি গোষ্ঠী দেশটির বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তারা সমাজতন্ত্র কায়েম জন্য আন্দোলন করছেন।

বিবিসির ম্যানিলা প্রতিবেদক মনে করেন, মোরোদের সঙ্গে সরকারের শান্তি চুক্তি মিন্দানাওয়ের অধিবাসীদের স্বায়ত্তশাসনের আওতা আরো সম্প্রসারিত করবে। কিন্তু এ চুক্তির ফলে ওই অঞ্চলের সব সংঘর্ষ হয়তো বন্ধ হবে না। কারণ আরো কয়েকটি গোষ্ঠী সেখানে পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।

চুক্তি স্বাক্ষরের পরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এই চুক্তি সইয়ের ফলে দুই পক্ষ আর পেছনের দিকে তাকাবে না বরং তারা ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির দিকে নজর দেবেন।

উল্লেখ্য, মোরো বিদ্রোহী ও ফিলিপাইন্স সরকারের মধ্যে শান্তি চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে মালয়েশিয়া। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এটিই মালেশিয়ার সবচেয়ে বড় সফলতা বলে মনে করা হচ্ছে।

ফিলিপাইন্সের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত মিন্দানাও দ্বীপে ১৯৭০-এর পর থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ও সংঘর্ষে এ পর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজার মানুষ মারা গেছেন।

ফিলিপাইন্সে পঞ্চাশ লাখ মুসলমান অধিবাসী রয়েছেন। কিন্তু খিস্টানরা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফিলিপাইন্সই বিশ্বের একমাত্র সাংবিধানিক খ্রিস্টান রাষ্ট্র।

তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top