সকল মেনু

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমালো সরকার

ঢাকা, ২৪ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : চলতি অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, ‘চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হার সাড়ে ৬ শতাংশ অর্জিত হবে।’ যেখানে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

সোমবার জাতীয় সংসদে প্রথম অধিবেশনে চলতি অর্থবছরের বাজেটের দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত (জুলাই-ডিসেম্বর) বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি অর্জিত না হওয়ার পেছনে ১৮ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধকে দায়ী করে মুহিত বলেন, ‘হরতাল-অবরোধের কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতিতে চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে আমদানি ব্যয়ও। আর আয় কমেছে প্রবাস, বৈদেশিক সহায়তা ও কলমানিতে। তবে আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুস্থিত এবং সহায়ক মূদ্রনীতির প্রভাবে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

মন্ত্রী জানান, ছয় মাসের বাজেট বাস্তবায়নের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে মূল্যস্ফীতি কমেছে। বার মাসের গড় মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বর ২০১২-এ ৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে তা সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এ সময়ে বেড়েছে জাতীয় রাজস্ব আয়ও। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আওতাধীন কর রাজস্ব আদায় চলতি অর্থবছরে জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ১২ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৫০ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা।

অর্থনীতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি আয় ১২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার হতে সাড়ে ১৬ শতাংশ বেড়ে ১৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ছয় মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ব্যবহার হয়েছে ১৮ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা যা ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১৬ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে বেড়েছে আমদানি ব্যয়। আমদানি ব্যয় ১৬ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ১৮ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার হয়েছে। এছাড়া গত ছয় মাসে প্রবাসে আয়ে কিছু নিম্নগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। যা ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এই ছয় মাসে ১২ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ দশমিক শুন্য ৭ ডলারে উন্নীত হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে খাদ্য পণ্যের মূল্য অনেকটাই কমবে। উন্নত বিশ্নের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক নীতির স্বাভাবিকায়ন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়ক মুদ্রানীতির প্রভাবে বাংলাদেশের সাধারণ মূল্যস্ফীতি ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ হতে কমে ২০১৪ সালের জুন নাগাদ শতকরা ৭ শতাংশে দাঁড়াবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

অর্থমন্ত্রী জানান, গত চার বছরে অর্জিত প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বিগত তিন মাসের অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে কৃষি, শিল্প ও ব্যবসায় কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চারের জন্য উৎপাদন ও রপ্তানি পর্যায়ে কতিপয় রাজস্ব-আর্থিক সুবিধা প্রদানের বিষয় সরকার সক্রিয় বিবেচনা করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top