সকল মেনু

ইসলামের পারিবারিক ও সামাজিক বিধান : প্রবন্ধ নং-০১ : অবতরণিকা

ধর্ম প্রতিবেদক, ২২মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) :

অবতরণিকা

সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্যে, যিনি একক, অদ্বিতীয়। অপরিসীম দয়ালু, পরম ক্ষমাশীল। আমরা সর্বতোভাবে তারই উপর ভরসা করি এবং আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন সকল বিষয়ে তিনিই আমাদের একমাত্র সহায়। শান্তি ও পরিপূর্ণ রহমত বর্ষিত হোক তাঁর বান্দা ও সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর। যিনি মানবজাতির জন্যে রহমত, উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা ও কিয়ামত দিবসে আমাদের শাফায়াতকারী। শান্তি ও পরিপূর্ণ রহমত বর্ষিত হোক তার পবিত্র পরিবার পরিজন, তার সাহাবায়ে কেরাম এবং তাদের উপরও যারা তাঁকে অনুসরণ করে কিয়ামত দিবস অবধি।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। যা মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের সকল দিককে পরিবেষ্টিত করে। অনুরূপভাবে স্থান, কাল নিরপেক্ষভাবে এই আসমানী বিধান সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ বিধানের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি তার গুরুত্বারোপ। কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের প্রতি আল্লাহ তাআলার অধিকারের চেয়েও তা অধিক গুরুত্ব রাখে। যদি কেউ আল্লাহ তাআলার প্রতি ব্যক্তিগত অধিকার আদায়ে ব্যর্থ হয় এবং পরে আন্তরিকতার সাথে তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আশা করা যায় আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। কোরান মাজিদ বলে, আল্লাহ তাআলা তাওবাকারীদের ভালবাসেন।’ (২:২২২) অতএব, যদি কেউ কোন মানুষের অধিকার নষ্ট করে কিয়ামতের দিন সে ঐ ব্যক্তির কাছে অপরাধী হিসেবে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। উভয়ের মাঝে আল্লাহ তাআলা একজন বিচারকের ভূমিকা পালন করবেন। যতক্ষণ মজলুম ব্যক্তি অপরাধীকে ক্ষমা করবে না ততক্ষণ আল্লাহ তাআলাও তাকে ক্ষমা করবেন না। উপরন্তু, যদি কেউ সমাজে কারো সাথে অসদাচারণ করে তবে তা পুরো সমাজে অনর্থের জন্ম দেয়। কোরান মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তাআলা অনর্থ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না।’’( ৫:৬৭) আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন এধরনের মানুষকে ক্ষমা করবেন না। তাই সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে আমাদের যথার্থ জ্ঞান থাকা এবং তা পালনের ক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করা আবশ্যক।

আল্লাহর বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতা ও তা লঙ্ঘনের পরিণতি পশ্চিমা সমাজে বিভিন্নভাবে পরিলক্ষিত হয়; যেমন, পারিবারিক ভাঙ্গনের উচ্চ হার, অবৈধ সন্তানের আধিক্য, সন্তান ও স্ত্রীদের দুর্ব্যবহার, পিতা মাতার প্রতি অবজ্ঞা, ক্ষয়িঞ্চু পারিবারিক ব্যবস্থা, বিবাহ বিচ্ছেদের উচ্চ মাত্রা, একক মাতৃপরিবার, নিত্য বর্ধমান ধর্ষণের ঘটনা, খুন, সড়ক অপরাধ ইত্যাদি। আমাদের নব প্রজন্ম ও পরিবারগুলোকে এসব দুষ্টকর্ম থেকে রক্ষা করতে হবে। এ উদ্দেশ্যেই এই ছোট সংকলনটি রচনা করা হয়েছে।

এই বইটি ইসলামের পারিবারিক ও সামাজিক বিধি বিধানের একটি উদ্দেশ্যমূলক বর্ণনা প্রদান করে। আমি এসব বিধানের সাথে সংশ্লিষ্ট কুরআনের আয়াত ও হাদিসকে সন্নিবেশিত করেছি। অতএব, এটিকে সংশ্লিষ্ট কুরআনের আয়াত ও হাদিসের একটি সংকলন বলা চলে। (মূল ইংরেজী বইয়ে) কোরান মাজিদের উদ্ধৃতির ক্ষেত্রে আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলী, মারমাডিউক পিকথাল ও টি বি আরভিং কৃত অনুবাদের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এই পুস্তকে উদ্ধৃত হাদিসসমূহ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর বাণীর কোন সাহিত্যপূর্ণ অনুবাদ নয়; বরং এক্ষেত্রে সাদামাটা ও সহজবোধ্য ইংরেজীর আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।

আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি তাঁর স্বীয় অনুগ্রহ ও দয়ায় যেন এই আন্তরিক প্রচেষ্টাকে গ্রহণ করেন এবং আমি ও যারা এই পুস্তক প্রস্ত্তত করার ক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করেছে তাদের জন্য আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভের একটি উসীলা করেন। আমি আরও দোয়া করি, আল্লাহ তাআলা যেন এই বইটিকে পাঠকদের হেদায়েত ও সুপথ লাভের একটি মাধ্যম বানান।

ড. মাজহার ইউ কাজি 
হিউস্টন, টেক্সাস

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top