খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১২ ও ২০১৩ সালের মধ্যে যেসব বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হওয়ার কথা ছিল সেগুলো চালু তো দূরের কথা শেষই করতে পারেনি। এমনকি আরো দুই থেকে তিন বছর বাড়নোর জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের কাছে। বিদ্যুৎ বিভাগের ১৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড অগমেন্টেশন অব ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক অব ডিপিডিসি প্রকল্পটি ২০১০ সালের শুরুতেই অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে প্রকল্প বিশেষ করে জনগুরুত্বপূর্ণ নামের প্রকল্পগুলো একনেকে অনুমোদনের আগেই টেন্ডার ও ঠিকাদারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। পরে একনেকে পাস করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঠিকাদারকে কাজের অনুমোদন দেয়া হয়। ভারতের সাথে বাংলাদেশের যে বিদ্যুৎ বিনিময় প্রকল্প রয়েছে, সেটা একনেকে অনুমোদনের ছয় মাস আগেই ঠিকাদার চূড়ান্ত করা হয়। উল্লিখিত রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড অগমেন্টেশন অব ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক অব ডিপিডিসি প্রকল্পটি ২০১২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখন এসে সেটার মেয়াদ বাড়নো হচ্ছে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। আর ব্যয় বাড়ছে ৩২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বা ১৯.২৬ শতাংশ। ডিপিডিসি গড় সিস্টেম লস বা চুরি এখন ১০ শতাংশ। কিন্তু নেটওয়ার্ক অপারেশন অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসের (এনওসিএস) অন্য একটি প্রতিবেদনে সেটাকে ১২ শতাংশের বেশি বলা হয়েছে। সময় শেষ হওয়ার প্রায় দুই বছর পরে এসে বলা হচ্ছে প্রকল্পের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
আর প্রকল্প সাহায্যসহ এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের বিবিয়ানা-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি এবং ফেঞ্চুগঞ্জ-বিবিয়ানা ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে চার বছর। ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৩০৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বা মোট ব্যয়ের ১৭.৬৯ শতাংশ। ফলে এখন ব্যয় ১৭ শ’ ১৪ কোটি টাকা থেকে দুই হাজার ১৭ কোটি টাকার বেশি হয়েছে। গত ২০১৩ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ করার কথা থাকলেও তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এখন প্রকল্পটির সময় টেনে ২০১৭ তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর মাঝে জিনিসপত্রে মূল্য বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে আবারো ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হবে। এই প্রকল্পের কাজ শুরু বিলম্বিত হওয়ার কারণ হিসেবে জমি অধিগ্রহণে জটিলতার কথা বলা হয়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে ৭৩ শতাংশ।
এ দিকে বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ প্রবাহের হুইলিং চার্জ প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ২৩ পয়সা বর্তমানে রয়েছে। যা ২০০৫ সালে নির্ধারণ করা হয়েছে। এখনো বলবৎ আছে। এটা বাড়ানো না হলে প্রকল্পটি আর্থিকভাবে লাভজনক হবে না।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, প্রকল্পের বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও স্থানীয় সরকার খাতের প্রকল্পগুলো কখনোই সহজে শেষ হয় না। বছরের পর বছর প্রকল্প চলতে থাকে। ফলে সরকারের অহেতুক ব্যয় বাড়ছে। জনগণের কোনো ধরনের উপকার হচ্ছে না। এসব বন্ধ করা না হলে প্রতি বছর এডিপিতে ব্যয় বাড়বেই। (নয়াদিগন্ত)
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।