সকল মেনু

আসছে সুপার পাওয়ার নিয়ে ‘বায়োনিক গাছ’!

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক, ২০ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : বিশ্বখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এম আই টি’র গবেষকরা গাছদেরকে করে তুলেছেন মহাশক্তিশালী, অর্থাৎ তাদেরকে দেয়া হয়েছে ‘সুপার পাওয়ার’। কীভাবে এটা দেয়া হলো? গাছগুলোর কোষে অতিক্ষুদ্র কার্বন ন্যানো টিউব প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এর ফলে কি হয়েছে জানেন? এ পরিবর্তিত গাছগুলোর সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া অন্য গাছের তুলনায় ৩০ ভাগ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। আর কিছু গাছ বাতাসে দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থের উপস্থিতি সামান্য পরিসরে নির্ণয় করতে সক্ষম হয়েছে! কিন্তু এটা মাত্র গল্পের শুরু!

কীভাবে এ ন্যানোটিউবগুলোকে গাছের কোষে প্রবেশ করানো হলো? এটা ছিল প্রথম সমস্যা। প্রাথমিকভাবে গাছে যে পানি ব্যবহার করা হয়, তার সাথে ন্যানোটিউব গুলো মিশিয়ে দিয়ে সেই পানি গাছগুলোর উপর ছিটিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু এ পদক্ষেপ ব্যর্থ হয়। কারণ গাছের শিকড়ের গঠন এরকম যে সেটা এই ন্যানো-টিউবগুলোকে গাছের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। এখন উপায় কী? গবেষকরা উপায় খুঁজতে শুরু করলেন। গাছের পাতার নিচে রয়েছে অতিক্ষুদ্র স্টোমাটা বা পত্ররন্ধ্র। এ পত্ররন্ধ্রের মধ্য দিয়েই কার্বন ডাই অক্সাইড, অক্সিজেন উদ্ভিদের দেহে প্রবেশ করে ও পানি বের হয়ে যায়। গবেষকরা দেখলেন, ন্যানো-টিউবযুক্ত দ্রবণ সিরিঞ্জের মাধ্যমে গাছের পত্ররন্ধ্র দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দেয়া সম্ভব।

এরপরের ধাপ ছিল, এ ন্যানোটিউব গুলোকে ক্লোরোপ্লাস্ট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া, পাতার যে অঙ্গাণুতে সালোকসংশ্লেষণ সম্পন্ন হয়। এটা করার জন্য ন্যানো টিউবগুলোকে এক বিশেষ ধরণের পলিমার দিয়ে আবৃত করে দেয়া হয়, যেটা ক্লোরোপ্লাস্টের চারপাশে থাকা লিপিড বুদবুদের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। আর এ লিপিড বুদবুদের কারণে ক্লোরোপ্লাস্টের কোন ক্ষতিসাধন করা ছাড়াই ন্যানো টিউবগুলো এর ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। গাছের সালোকসংশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য এরকম ধরণের ন্যানো টিউব পাতায় প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়, যেগুলো কিনা অনেক বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো শোষণ করতে পারে। গাছেদের পক্ষে এ পরিমাণ আলো শোষণ করা সম্ভব হয় না। যদিও ফলাফল ইতিবাচক, কিন্তু আরো বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন আছে।

গবেষকদল কার্বন ন্যানো টিউব প্রবেশ করিয়ে গাছে উপস্থিত নাইট্রিক অক্সাইডের উপস্থিতি নির্ণয়ের চেষ্টা করেন। এর ফলে গাছটি যদি দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থ দ্বারা আক্রান্ত হয় তবে এ ন্যানো টিউবগুলোর কোনো কোনটি ফ্লুরসেন্ট আলোর মত আলো বিচ্ছুরণ করে। এভাবে গাছে প্রবেশ করানো বিভিন্ন ধরণের ন্যানো টিউব আমাদেরকে দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থ, কীটনাশক কিংবা ছত্রাক আক্রমণ সম্পর্কে সতর্ক করে দিতে পারে।

এ সংক্রান্ত নিবন্ধ Nature Materials এ প্রকাশিত হয়েছে। এর প্রধান লেখক ছিলেন উদ্ভীদ জীববিজ্ঞানী হুয়ান পাবলো জিরাল্ডো, যিনি এম আই টি’র ক্যামিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক মাইকেল স্ট্রানো’র গবেষণাগারে কাজ করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top