সকল মেনু

হট্টগোলের মধ্যে এজলাস ছাড়লেন বিচারক

ঢাকা, ১৯ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার শুনানি চলাকালে দুপক্ষের আইনজীবীদের তীব্র হট্টগোলের মধ্যে এজলাস ছেড়ে গেলেন বিচারক। মামলার শুনানি শুরু হয় দুপুর ১টায়। হট্টগোল শুরু হওয়ার পর দুপুর দেড়টার দিকে বিচারক বাসুদেব রায় এজলাস ছেড়ে তার খাস কামরায় ঢুকে পড়েন।

শুনানির শুরুতে আসামীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া সময় বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘যেহেতু এই মামলার বিষয়টি উচ্চ আদালতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, সেহেতু নিম্ন আদালতে শুনানির কোনো এখতিয়ার নেই ‘

পাল্টা প্রসিকিউশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘গত দুই বছরে এই মামলার তারিখ ১০ বার পেছানো হয়েছে। অথচ মামলার গুরুত্ব অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যেই চার্জ গঠন করা বাধ্যতামূলক। এ জন্য আর কোনো সময় নেওয়ার অবকাশ নেই। আজই চার্জ গঠনের জন্য ফাইল প্রস্তুত করা হয়েছে।’

প্রসিকিউশনের এই বক্তব্যের পর আসামী পক্ষের আইনজীবীরা হৈচৈ শুরু করেন। এতে বিব্রতবোধ করেন বিচারক। তিনি এজলাস থেকে উঠে চলে যান। ২০ মিনিট পর বিচারক খাস কামরায় বসেই সময় বাড়ানোর আবেদন খারিজ করে দেন।

এর আগে বুধবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে পুরান ঢাকার জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাজির হন।  ঢাকার বিশেষ জজ-৩ বাসুদেব রায়ের আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল।

খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান জানান, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার গুলশানের বাসা থেকে আদালতের উদ্দেশে রওনা হন।

বিএনপি নেত্রীর হাজিরা উপলক্ষে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। এর মধ্যেই সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বে বিশাল একটি মিছিল আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছে। তারা মামলা থেকে খালেদা জিয়ার অব্যহতি চেয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দুটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে শেষবারের মতো সময় দিয়েছিলেন আদালত। ওই দিন বিচারক মো. রেজাউল ইসলাম মামলা দুটির অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ১৯ মার্চ ধার্য করেন। একই সঙ্গে তাকে ওই দিন আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন বিচারক।

এর আগে মামলা দুটিতে ধার্য দিনে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ জানিয়ে তার আইনজীবীরা সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। পরে সময় বাড়ান আদালত। এ পর্যন্ত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৪১ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় ১১ বার সময় চেয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৩৬ জন সাক্ষী। মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াসহ ছয়জন আসামি। অন্য আসামিরা হলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মীয় মোমিনুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামালউদ্দিন সিদ্দিকী, বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সলিমুল হক ও সরফুদ্দিন আহমেদ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, এতিমদের সহায়তার জন্য সংগ্রহ করা ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকার মধ্যে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট বগুড়ায় স্থানান্তর করেন খালেদা জিয়া।

২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের নামে তেজগাঁও থানায় অন্য মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।

এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা পারস্পরিক যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭ কোটি ৮০ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ২০০৫ সালের ৯ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় শাখা থেকে ওই টাকা উত্তোলন করা হয়।

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top