সকল মেনু

যশোরে ২০ জোড়া তরুণ তরুণীর যৌতুকবিহীন গণবিয়ে

 রিপন হোসেন, যশোর থেকে,১৪ মার্চ:  শুক্রবার দুপুরে যশোরের ঝিকরগাছায় বিয়ের পিড়িতে বসেছিল অসচ্ছল পরিবারের ২০ কনে। একটি দাতব্য সংস্থার সহায়তায় যৌতুক বিহীন বিয়ের আসরে এই ২০ জনকে তুলে দেয়া হয় তাদের পছন্দসই পাত্রদের হাতে।  এদেরই একজন কবিতা। তিনি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের সুলতান দফাদারের মেয়ে। শরীরে পোড়া ক্ষতের কারণে পাত্রপক্ষ তাদের কাছে মোটা টাকা যৌতুক দাবি করতো। দিতে না পারায় বিয়ে হচ্ছিল না কবিতার। অবশেষে শুক্রবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার। তাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়া অহিদুল ইসলাম জানালেন, কবিতার শরীরের ক্ষতের কথা জেনেই তাকে বিয়ে করছি। আমি মনে করি, দুর্ঘটনার জন্য কেউ সারাজীবন কষ্ট পেতে পারে না। আর আমি কাপুরুষ নই যে যৌতুক নিয়ে বিয়ে করবো।  যশোর শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে যশোর-বেনাপোল সড়কের গাজির দরগাহ কুয়েত ইসলামিক ইয়াতিম কমপ্লেক্সে ব্যতিক্রমধর্মী এ গণবিয়ের আয়োজন করেছিল কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটির বাংলাদেশ অফিস। শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল এর অর্থায়নে  যৌতুকবিহীন গণবিবাহ অনুষ্ঠিত হয়
বিয়ে উপলক্ষে কমপ্লেক্সের মূল ফটকসহ ভিতরের বিয়ের পরিবেশ তৈরি করতে সাজানো হয় সবকিছু। লাল বেনারশি শাড়ি ও পাঞ্জাবি-টোপর মাথায় বসেছিল নব বর-বধূ। বিয়ে অনুষ্ঠানে কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটির যশোর অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাওলানা নাসীরুল্লাহর জানান, যৌতুক একটি ব্যাধি হিসেবে বিস্তার করেছে। এছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণেও অনেকের বিয়ে সম্ভব হয় না। ফলে অনেক মেয়েকে সারাজীবন অবিবাহিত থাকতে হয়। যৌতুক ও প্রতিবন্ধিতার এ বিষয়টি দৃষ্টিতে আসায় তারা এ গণবিবাহের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এবার তৃতীয়বারের মত এ বিয়ে আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নবদম্পত্তি যাতে সুখে সংসার করতে পারে তার জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে সব ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরই অংশ হিসেবে বিয়ের সময় দেয়া হয়েছে একটি ভ্যান, একটি সেলাই  মেশিন। এছাড়া ব্যবহারের পোশাকের মধ্যে বিয়ের শাড়ি, বোরকা, বিয়ের উড়না, বাড়িতে ব্যবহারের শাড়ি, পায়জামা, পাঞ্জাবি, গেঞ্জি, লুঙ্গী, তোয়ালে, গামছা, হাত রুমাল, চামড়ার জুতা, তোষক, বিছানার চাদর, লেপ বালিশের কভার দেয়া হয়েছে। এছাড়া হাড়ি-পাতিল ঢাকনাসহ জগ, মেলামাইন প্লেট,  মেলামাইন গ্লাস, চামচসহ সাংসারিক জিনিষপত্র দেয়া হয়েছে। এই বিয়েতে নব দম্পতিদেরকে সব মিলিয়ে ৫০ হাজার টাকার সামগ্রী দেয়া হয়।
এদিকে নবদম্পত্তিদের শুভেচ্ছা জানাতে বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটির বাংলাদেশ অফিসের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. গাজী জহিরুল ইসলাম, শমিয়া এন্ড শেয়ায়েখ যাকাত কমিটি কুয়েতের ডাইরেক্টর জেনারেল সালেম আল হামার, প্রজেক্ট ইনচার্জ নওয়াফ তব্বা, ফাহহিহিল যাকাত কমিটি কুয়েতের ডাইরেক্টর জেনারেল ইহাব আল দাব্বুসসহ এলাকার স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top