সকল মেনু

ঐশীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

 আদালত প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা:  পুলিশের স্পেশাল  ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল শাখা) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যার ঘটনায় নিহত দম্পতির একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।  দুপুরে ডিবির ইন্সপেক্টর আবুয়াল খায়ের মাতুব্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে পৃথক দু’টি চার্জশিট দাখিল করেন। ঐশীর সঙ্গে একটি চার্জশিটভূক্ত অপর আসামিরা হলেন, ঐশীর বন্ধু জনি ও রনি। অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে নিহত দম্পতির বাসার গৃহকর্মী সুমি আক্তারকে আসামি করে অন্য চার্জশিটটি দাখিল করা হয়েছে। বর্তমানে ঐশী কাশিমপুর কারাগারে ও সুমি গাজীপুরের কিশোরী সংশোধন কেন্দ্রে আছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ঐশীকে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়ায় সে বাইরের পরিবেশের প্রতি মোহগ্রস্ত হয়ে নিজ পরিবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। একারণে মা-বাবার শাসনকে অমানুষিক আচরণ হিসেবে গণ্য করতো সে। এক পর্যায়ে খুনের ঘটনার ২/৩ মাস পূর্বে ঐশী তার ড্যান্স মাস্টার জনির সাথে দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এজন্য ঐশী তার বাবার কাছে ৩০ হাজার টাকা চায়। কিন্তু ঐশীর বাবা মাহফুজুর রহমান মেয়েকে দুবাই যেতে নিষেধ করেন। ঘটনার ১ মাস পূর্বে ঐশী তাদের চামেলীবাগের বাসা থেকে বের হয়ে বন্ধু জনির সঙ্গে রামপুরা এলাকায় বাসা সাবলেট নিয়ে ১৫ দিন বসবাস করে। ওই সময়ই বন্ধু জনির আশ্রয় প্রশ্রয়ে থেকে পরিবারের প্রতি বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এবং মা-বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। খুনের ঘটনার দিন ১৫ আগে সে বাসায় ফিরে আসে। পরে অবাধ চলাচল ও মোবাইলে ব্যবহারের ওপর বিধি নিষেধ আরোপিত হয়। ঐশী তার ড্যান্স মাস্টার জনির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মুক্ত জীবন যাপনের জন্য দুবাই যেতে টাকার প্রয়োজনে মা-বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করে। এ পরিকল্পনার কথা সে বন্ধু জনিকে জানায়। জনি তাকে খুন করতে প্ররোচিত করে এবং আশ্রয় দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। ঐশী ও জনির বন্ধু রনি খুনের পরিকল্পনার কথা জানতো। ঐশী তার মা-বাবাকে খুন করার পরও তাকে আইনের হাত থেকে বাঁচাতে খুনের কথা গোপন করে তার দূর সম্পর্কের এক খালার কাছে ঐশীর থাকার ব্যবস্থা করে। অভিযোগপত্রে সুমির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, সুমি ঐশীকে কফির সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশাতে দেখে। কিন্তু ঐশীর মা-বাবার প্রতি অজ্ঞাত বিদ্বেষের কারণে বিষয়টি তাদের কাউকে জানায়নি। কফি খেয়ে তারা অজ্ঞান হয়ে গেলে যখন ঐশী তাদের খুন করে সে সময় সুমি বিষয়টি দেখে চিৎকার চেঁচামেচি করে মানুষ জড়ো না করে খুনের প্রতি নীরব সমর্থন জানায়। পরবর্তীতে ঠান্ডা মাথায় খুনের আলামত নষ্ট করার জন্য রক্ত পরিষ্কার করে ও লাশ বাথরুমে লুকাতে সহায়তা করে।
গত বছরের ১৪ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চ্যামেলীবাগের বাসায় পুলিশের বিষেশ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান খুন হন। মাহফুজ পুলিশের বিষেশ শাখার রাজনৈতিক অধিশাখায় কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী স্বপ্না এবং দুই ছেলে-মেয়ে ও এক শিশু গৃহকর্মী নিয়ে চ্যামেলীবাগের বাসায় থাকতেন তিনি। ঐশী ধানমন্ডির অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ও লেভেলের শিক্ষার্থী । নিহত দম্পত্তিদের একমাত্র ছেলে ঐহী রহমান রাজারবাগ পুলিশ লাইনের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top