সকল মেনু

বাংলাদেশের মানুষ চাইলে আরেকটি নির্বাচন হতে পারে : চীনা রাষ্ট্রদূত

ঢাকা, ৬ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জুন বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যদি চায় খুব শিগগিরই আরেকটি নির্বাচন হতে পারে এবং এটা কোন কঠিন কাজ নয়। আর এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মহলের বলার কিছু নেই। তিনি বলেন, সংলাপের মাধ্যমেই বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিদ্যমান সংকটের সমাধান হতে পারে ।

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্ট এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, যেভাবে গত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তাতে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক জোট অংশ নেয়নি এটা দু:খজনক। তবে, এই সংকট রাজনৈতিক সংলাপ ও দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করা সম্ভব।

মহেশখালীতে গভীর সমুদ্র নির্মানে চীনের আগ্রহ থাকলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোন আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাননি বলে জানান রাষ্ট্রদূত।

ভারতের কারণে চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক কখন খারাপ হবার সম্ভাবনা নেই এমন মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত ও চীন দুই দেশই বাংলাদেশের সাথে একযোগে কাজ করতে পারে। চীনের কুইমিং থেকে মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশে যে সড়ক নির্মানের কথা শোনা যাচ্ছে তার সবশেষ অবস্থা জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, এই কাজের ব্যাপারে সব দেশই ইতিবাচক এবং যতদ্রুত সম্ভব কাজ শুরু হবে।

আইনের শাসন একটি দেশে কতটা আছে তার ওপরই ওই দেশের সাথে অন্যান্য দেশের সম্পর্ক গড়ে উঠে মন্তব্য করে লি জুন বলেন, সন্ত্রাসের প্রতি জিরো টলারেন্সের যে নীতি বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করেছে, চীন তা সমর্থন করে এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে আরো নিবিড়ভাবে কাজ করতে চায় তার দেশ।

সম্প্রতি চীনের কুনমিং রেল স্টেশনে সন্ত্রাসী হামলায় যে ৩০ ব্যক্তি নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে তার উল্লেখ করে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এসব ঘটনাই প্রমাণ করে সন্ত্রাসবাদ আজ সারা বিশ্বের জন্যই একটি হুমকি।

২০২০ সালের মধ্যে চীনের প্রবৃদ্ধির হার দ্বিগুন করার জন্য তিন স্তরের যে রিফর্ম চীন সরকার গ্রহণ করেছে তাকে বর্তমান চীনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি করে লি জুন বলেন, এই বিশ্বায়নের যুগে কোন দেশের পক্ষেই একা উন্নতি করা সম্ভব নয়। তাই বাংলাদেশসহ সব দেশের সাথে সুসম্পর্ক রেখেই এগিয়ে যেতে চায় চীন।

তিনি বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে চীনের আমদানি ১০ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌছাবে এবং বহির্বিশ্বে চীনের বিনিয়োগের পরিমান গিয়ে দাঁড়াবে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে। একই সাথে চীন থেকে পর্যটকের সংখ্যা ৪০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।

চীনের এই বিশাল অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞের সাথে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রদূত লি জুন।

তিনি বলেন, চীন বর্তমানে তার অর্থনৈতিক কাঠামোকে পুনর্গঠনে কাজ করছে এবং এ লক্ষ্যে শ্রমিক নির্ভর শিল্প কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছে। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশ হতে পারে চীনের জন্য একটি আদর্শ স্থান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ বান্ধব নীতিমালা গ্রহন করা হচ্ছে এবং এখানে বিপুল সংখ্যক দক্ষ ও কর্মঠ শ্রমিক রয়েছে। তাই আগামীতে বাংলাদেশে বিপুল পরিমান চীনা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টের ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত। এজন্য দুই দেশের সরকারই আন্তরিকতার সাথে কাজ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আঙ্‌গুর নাহার মন্টি এবং সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি মাইনুল ইসলাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top