সকল মেনু

অন্যরকম রেকর্ডে উদ্বিগ্ন এনবিআর

ঢাকা, ২৮ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রাজস্ব ঘাটতি নজিরবিহীন প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়ে চলা এই ঘাটতিতে অন্যরকম রেকর্ড গড়লেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে কিভাবে এ ঘাটতি সমন্বয় করবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অর্থবছরের শেষ হতে আরোও পাঁচ মাস বাকি। আর এভাবে চলতে থাকলে অর্থবছর শেষে ঘাটতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। কারণ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আট হাজার কোটি টাকা ঘাটতি থাকলেও এক মাসের ব্যবধানে পূর্বের ঘাটতির সাথে আরো আড়াই হাজার কোটি টাকা যোগ হয়েছে। ফলে এ নিয়ে এনবিআর খুবই উদ্বিগ্ন। আর তাই আগামী রবিবার মূল্য সংযোজন কর (মূসক), আয়কর ও শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন এনবিআরের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন। বৈঠকে অর্থবছরের বাকি রাজস্ব ঘাটতি কমিয়ে আনতে নানা পরিকল্পনা নির্ধারণ, আদায় বাড়াতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অভিযান পরিচালনা করা ও বাজেটে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব কাটছাঁট ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এনবিআর সূত্রে জানা যায়,চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৬৯ হাজার ২২৯ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫৮ হাজার ৪২৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৭৯৯  কোটি ২৪ লাখ টাকা। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় চার হাজার ৬৫৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বেশি হয়েছে। গত বছর এ সময়ে আদায় হয়েছিল ৫৩ হাজার ৭৭৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সূত্র আরো জানায়, এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের চারটি উৎস আয়কর, মূসক, শুল্ক ও অন্যান্য করের মধ্যে শুধুমাত্র আয়করে এ সময়ে আদায় হয়েছে ১৮ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আয়করেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা পিছিয়ে আয়কর বিভাগ। অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে শুল্ক খাতে ১৮ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, মূসক খাতে ২১ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা ও অন্যান্য কর খাতে ৩৪০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। কিন্তু কোনো খাতেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। অর্থবছর শেষে ঘাটতির পরিমাণ বিষয়ে এনবিআরের সদস্য বশির উদ্দিন আহমেদ জানান, ঘাটতির পরিমাণ কত হতে পারে তা বলা মুশকিল। তবে বাজেটে রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে তা কমিয়ে দেয়া হবে। ঘাটতির কারণ হিসেবে ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি থেকে আদায় কমে গেছে। তাছাড়া রাজনৈতিক কারণে অর্থবছরের চার মাস ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ ছিল। এর পরও ঘাটতির অঙ্কটা বড় হবে না । এ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন এনবিআর রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযানে নামার উদ্যোগ নিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকি বিষয়ে বড় ধরনের অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এরই মধ্যে করযোগ্য আয় থাকার পরও দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকি দিয়ে আসছেন, এমন ব্যক্তিদের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে এনবিআরের কর জরিপ ও পরিদর্শন বিভাগ। এছাড়া বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা বকেয়া রাজস্ব আদায়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে এনবিআর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top