সকল মেনু

ঋণখেলাপির অভিযোগ; মনোনয়নপত্রের বৈধতা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

  এস এন ইউসুফ,হটনিউজ২৪বিডি.কম: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মনোনয়নপত্রের বৈধতা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। হলফনামায় তথ্য গোপন ও ঋণখেলাপি থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নের বৈধতা দেয়ায় হাইকোর্ট এ রুল জারি করেন।রিটার্নিং কর্মকর্তা কুমিল্লা-৬ (কুমিল্লা সদর ও আদর্শ) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (বর্তমানে সংসদ সদস্য) হাজি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মনোনয়নপত্র  গ্রহণ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং মনোনয়নের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন কমিশনে করা আপিল আবেদন খারিজ করে দেয়া সিদ্ধান্তকে কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, কুমিল্লা জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরানের করা রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৯ জানুয়ারি এ আদেশ দেন। মাসুদ পারভেজ খানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন। জানা গেছে, আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ২০০০ সালে সোনালী ব্যাংকের করপোরেট শাখা (মতিঝিল) থেকে ডার্টস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে কোম্পানির নামে ঋণগ্রহণ করেন। পরে সঠিকভাবে ঋণ পরিশোধ না করায় বাহাউদ্দিন বাহারকে ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮৯০ টাকা ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করে সোনালী ব্যাংক এবং ২০১১ সালের ২৪ জুলাই বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বাহাউদ্দিন বাহারকে নোটিস দেয় সোনালী ব্যাংক। ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করায় আ ক ম বাহাউদ্দিন সোনালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট মামলা (২৯০৫/২০১১) করেন। ২০০৭ সালে কোম্পানির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করায় ওই ঋণের জন্য ব্যক্তিগতভাবে তার দায় নেই বলে রিটে তিনি উল্লেখ করেন। হাইকোর্টের আদেশে আদালতে সিআইবি প্রদর্শন করা হলে বাহাউদ্দিন বাহারের নাম ঋণখেলাপি হিসেবে দেখা যায়। বর্তমানে মামলাটি চলমান রয়েছে। নবম সংসদের সংসদ সদস্য ও দশম সংসদের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় তার হলফনামায় ওই রিট মামলাটির তথ্য গোপন রাখেন বাহাউদ্দিন। ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, সোনালী ব্যাংক বাহাউদ্দিন বাহারকে ঋণখেলাপি ঘোষণা করায় যে রিট আবেদনটি তিনি হাইকোর্টে দায়ের করেছেন, তাতে কোনো স্থগিতাদেশ নেই। তাই আইনের চোখে তিনি ঋণখেলাপি। আর ২০০৭ সালে ডার্টস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড থেকে পদত্যাগ করলেও তা ব্যাংক অনুমোদিত হয়নি। সুতরাং ঋণখেলাপি থেকে দায় মুক্তির যে বিষয়টি থাকে, সেটি হয়নি। গত ২৫ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে বাহাউদ্দিন কুমিল্লা-৬ আসন থেকে মনোনয়নপত্র কিনে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করেন। দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রে তার বিরুদ্ধে কোনো ঋণখেলাপি মামলা নেই বলে উল্লেখ করেন। গত ৬ ডিসেম্বর তার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন কুমিল্লা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর বিরুদ্ধে একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরান নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর আপিলটি খারিজ করে নির্বাচন কমিশন। ফলে বৈধতা পায় বাহাউদ্দিন বাহারের মনোনয়ন। পরবর্তীতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বাহাউদ্দিন বাহারের প্রার্থিতার বৈধতার মূল বিবরণ ও আদালতে ঋণখেলাপি মামলা চলমান থাকা অবস্থায়ও কীভাবে নির্বাচন কমিশন তার প্রার্থিতা বৈধতা দিলেন— তা জানতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালতে রিট মামলা করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top