সকল মেনু

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : ঢাকা কলেজকে পূর্নাঙ্গ স্বায়ত্বশাষিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের জন্য আবারো অহিংস আন্দোলন শুরু করেছে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিনই নতুন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মাঠ পর্যায়ে আন্দোলনের পাশাপাশি অনলাইনেও বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে ঢাকা কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত করার জোর দাবি জানিয়ে আসছে।

এর আগেও বেশ কয়েকবার ঢাকা কলেজকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের জন্য অহিংস আন্দোলন, মানববন্ধন, মন্ত্রণালয়ে স্বারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে কলেজটি শিক্ষার্থীরা। তবে তখন এসব আন্দোলন প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীন ছাত্রসংঠনের নেতাদের চাপের মুখে সফলতার মুখ দেখেনি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করছে বিশ্বায়নের এই যুগে শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে আরো কয়েকগুন বাড়িয়ে নিতে ঢাকা কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত করা সময়ের দাবি।

গত সপ্তাহের শেষ থেকে আবারো ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার ও রোববার সকাল ১১টায় কলেজ প্রাঙ্গনে মানববন্ধন করা হয়েছে। তবে প্রতিবারের তুলনায় এবারের মানববন্ধনে উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ঢাকা কলেজ সাধারণ ছাত্র ঐক্য পরিষদের ব্যানারে মানববন্ধনে প্রায় দুই হাজার ছাত্র সতস্ফুর্তভাবে অংশ নেয়।

মানববন্ধনটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে শুরু করে নিউ মার্কেট পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সুশৃংঙ্খলভাবে মানববন্ধন শেষ করে ছাত্ররা কলেজের শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মানববন্ধনে অংশ গ্রহণকারী ছাত্ররা জানান, “যতদিন পর্যন্ত ঢাকা কলেজকে পূর্নাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না করা হবে ততদিন পর্যন্ত এ দাবি আদায়ে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”

শিক্ষার্থীরা ‘ঢাকা কলেজকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করো’, ‘উচ্চশিক্ষার সূচনাস্থলকে তার পূর্ণাঙ্গ মর্যাদা দাও’এবং ‘রক্ত নাও বিশ্ববিদ্যালয় দাও’—এসব প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধন করেন। শিক্ষার্থীরা এ সময় ‘এক দফা এক দাবি, ভার্সিটি ভার্সিটি’ স্লোগান দেয়।

বক্তব্যে ছাত্ররা বলেন, “ঢাকা কলেজ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা এখানে রয়েছে। এখন শুধু সরকারের সদিচ্ছা থাকলেই ঢাকা কলেজকে পূর্নাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা সম্ভব।”

শেষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সবুজ-উর-রহমান। পরবর্তী কর্মসূচিতে বলা হয়- ২৪ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা কলেজ এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার জনাব ফজলে নূর তাপসের বরাবর স্বারক লিপি প্রদান, ২৫ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি, ২৬ শে ফেব্রুয়ারি প্রেস ক্লাবে মানববন্ধনের পর মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী বরাবর স্বারক লিপি প্রদান, ২৭ শে ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্র সমাবেশ।

এরপর ঢাকা কলেজকে স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় রুপান্তরে জন সমর্থন সংগ্রহের জন্য গণস্বাক্ষর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। ১৭০ বছরেরও পুরোনো এ প্রতিষ্ঠানকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরের জন্য শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন অনলাইনেও ছড়িয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বেশ সোচ্চার এ আন্দোলনে।

আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থী শরীফ বলেন, “আমরা যে দাবি জানিয়ে আসছি এটা ঢাকা কলেজের ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি। আমরা আমাদের এ যৌক্তিক অহিংস আন্দোলন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে চালিয়ে যাবো। শিক্ষার দ্রুত প্রসার, আধুনিকীকরণ এবং বিশ্বায়নের এ যুগে শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে দেশে আরো বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। যেহেতু ঢাকা কলেজ দেশের অন্যতম এবং ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেই সাথে অবকাঠামোগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় করার মতো যথেষ্ট জায়গা, আবাসিক হল আছে তাই সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ঢাকা কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা সম্ভব। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছেন তাই শিক্ষাকে সবার দোড় গোরায় পৌছে দিতে ঢাকা কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরে ভুমিকা রাখবেন এটাই আমাদের চাওয়া।”

এ প্রসঙ্গে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ড. আয়েশা বেগম  বলেন, “শিক্ষার্থীরা নিজেরাই স্বপ্রণোদিত হয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কলেজ প্রশাসন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তা এবং কলেজের সম্পদের যেন কোন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় করার যে দাবি জানিয়ে আসছে এটা নিত্যান্তই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যাপার এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।”

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top