সকল মেনু

আফিল ও মনিরুলের আবেদন হাইকোর্টে পর্যবেক্ষনসহ নিষ্পত্তি

 রিপন হোসেন, যশোর থেকে:  যশোর -১ ও ২ সংসদীয় আসনের নির্বাচিত ২ সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও এ্যাড. মনিরুল ইসলামের করা পৃথক ২টি রিট আবেদন পর্যবেক্ষণ দিয়ে নিষ্পত্তি করে দিয়েছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মো. খুরশীদ আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনে থাকা অভিযোগ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ২ সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটকারীদের আইনজীবী এম কামরুল হক সিদ্দিকী। আদালতের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে কামরুল হক সিদ্দিকী বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার পর অবিলম্বে ওই ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করা সমীচীন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অন্য কোন সিদ্ধান্ত দেওয়ার সুযোগ নেই। রিটকারীদের পক্ষে গতকাল আদালতে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী রফিক – উল -হক । নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম।গত ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে শেখ আফিল উদ্দিনের দেওয়া একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় নির্বাচন কমিশন যশোর -১ ও ২ আসনের ফলাফল প্রকাশ স্থগিত ঘোষনা করে। এই ২টি আসন বাদে বাকি ২৯৮ টি সংসদীয় আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নামের গেজেড প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। একই সাথে এই ২টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন কেন বাতিল করা হবে না সে বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য ওই ২ সংসদ পদ প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় শোকজ করেন। ৭ই জানুয়ারি ইস্যু করা ওই শোকজ নোটিশের মাধ্যমে তাদেরকে স্বশরীরে কমিশনে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে তাদের ব্যক্তিগত জবাব প্রদানেরও নির্দেশনা প্রদান করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। ১৫ই জানুয়ারি অভিযুক্ত দুই নির্বাচিত প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন ও এ্যাড. মনিরুল ইসলাম পৃথক ভাবে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (আইন) বাসুদেব রায় স্বাক্ষরিত ওই শোকজ নোটিশের জবাব দাখিল করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে। একই সাথে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত গেজেডে তাদের নাম অর্ন্তভুক্তি না করায় নির্বাচন কমিশনকে উল্টো অভিযুক্ত করেন জবাব দাখিলকারী ২ প্রার্থী। একই সাথে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক উত্থাপিত বিষয়টি নিষ্পত্তির আবেদন জানিয়ে উক্ত ২ জন প্রার্থী হাইকোর্টের মির্জা হোসেন হায়দার ও খুরশিদ আলম সরকারের যৌথ বেঞ্চে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। আবেদনকারীদের পক্ষে এ্যাড. কামরুল ইসলাম সিদ্দিক উক্ত পিটিশন দুটি দাখিল করেন। যার নম্বর ৩২৮ ও ৩২৯। তারিখ ১৫/১/২০১৪। আদালত পিটিশন দুটি গ্রহণ করে শুনানীর দিন ধায্য করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার উক্ত আদালতে পিটিশন দুটির শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে বিকালে মির্জা হোসেন হায়দার ও খুরশিদ আলম সরকারের যৌথ বেঞ্চ উক্ত পিটিশন দুটি নিষ্পত্তি করে একটি রায় প্রদান করেন। রিট পিটিশনের বিবাদী নির্বাচন কমিশনের প্রতি নির্দেশনা মূলক ওই রায়ে আদালত বলেছেন, “আদালতের রায়ের কপি প্রাপ্তির ২ সপ্তাহের মধ্যে যশোর -১ ও ২ সংসদীয় আসনে স্থগিত ফলাফলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।” আদালতের এই রায়ের ফলে আবারো ঝুলে গেল নির্বাচনী ফলাফল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে জানানো হয়, ইতিপূর্বে নির্বাচন কমিশন অভিযুক্ত ২ সংসদ সদস্য পদ প্রার্থীকে কমিশনে হাজির হয়ে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্পর্কে স্বশরীরে জবাব দেওয়ার জন্য নোটিশ জারি করেছিল। কিন্তু স্বশরীরে নির্বাচন কমিশনে হাজির হয়ে জবাব প্রদানের পরিবর্তে তারা উচ্চ আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির আবেদন জানান। এতোদিন বিষয়টি সাব জুডিশিয়াল থাকায় নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি বা করার কোন সুযোগও ছিল না। আদালতের আজকের রায়ের কপি পাওয়ার পরে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন নতুন করে ভাববেন বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন।উল্লেখ্য গত ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে যশোর -১ শার্শা আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাবেক এমপি শেখ আফিল উদ্দিন। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে তিনি যশোর -২ ঝিকরগাছা চৌগাছা সংসদীয় আসনের প্রার্থী এ্যাড. মনিরুল ইসলামের পক্ষে ঝিকরগাছা পারবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। ওই বক্তব্যকে ঘিরে নির্বাচনী প্রচারনায় যুক্ত হয় বিকর্ত। গত ১লা জানুয়ারি বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ আকারে তুলে ধরেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী রফিকুল ইসলামের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শাহীন – উল – কবীর। এর ৪ দিন পরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ্যাড. মনিরুল ইসলাম বিপুল ভোটের ব্যবধানে বেসরকারী ভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top