সকল মেনু

সরকারের আলু চাষিদের বাঁচাতে প্রণোদনা

 আফিফা জামান, ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি :  আলু চাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে বড় পরিসরে আলু রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য  নেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ প্রণোদনা। এর অংশ হিসেবে রাশিয়ায় রফতানি হচ্ছে আলু। চলতি সপ্তাহে ২০ হাজার টন আলু নিয়ে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে প্রথম কার্গো যাত্রা শুরু করবে।

সরকারের সহযোগিতায় বেসরকারি এক ব্যবসায়ি এই আলু রফতানির উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে পর্যায়ক্রমে বেসরকারি খাতের সকলের জন্যই এ বাজার উন্মুক্ত হচ্ছে বলে কৃষি মন্ত্রণালয় সুত্র জানিয়েছে।

অন্যদিকে,শিল্পখাতে আলুর ব্যবহার বাড়াতে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে অল্প সূদে ঋণসহ পটেটো ফ্ল্যাক্স কারখানাগুলোকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। আলু রফতানির উপর দেওয়া হবে ২০ শতাংশ হারে নগদ অর্থ প্রণোদনা ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের হাটবাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ বাড়ায় স্থানীয় বাজারগুলোতে অনেকটা ‘পানির দরে’ বিক্রি হচ্ছে আলু। প্রতি কেজি আলুর দাম স্থানভেদে ১ থেকে ২ টাকায় নেমে এসেছে। আলুর অস্বাভাবিক দরপতনের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানের কৃষকরা রাস্তায় আলু ফেলে, বুলডোজার দিয়ে আলু পিষে নর্দমায় ফেলে প্রতিবাদ করছে কৃষক।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও  মহাপরিচালক (বীজ উইং) আনোয়ার ফারুক বলেন, ‘আলুর কম দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকারও। দামের সঙ্গে ভবিষ্যৎ উৎপাদনের সম্পর্ক জড়িত। এজন্য সরকার বিশেষ প্রণোদনার সুযোগ দিতে যাচ্ছে। এরইমধ্যে শিল্প ও রফতানি খাতে আলুর ব্যবহার বাড়াতে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যার ফলে আলুর কম দামের ফাঁদ থেকে মুক্তি পাবে দেশের কৃষক।

জানা গেছে, গত বছর প্রায় ১ লাখ মেট্রিকটন আলু বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি করে দেশের ব্যবসায়িরা। এবার এ পরিমাণ বেড়ে কয়েকগুণ হতে পারে। এরইমধ্যে বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠান এগ্রি কনসার্ন রাশিয়ার সঙ্গে ২০ হাজার টন (৭০০ কনটেইনার) আলু রফতানির চুক্তি করেছে। চলতি সপ্তাহ থেকে এসব আলু রফতানি শুরু হবে। এছাড়া আরো কয়েকজন ব্যবসায়ি আলু রফতানির উদ্যোগ নিয়েছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া আলুর সিংহভাগই মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলংকায় রফতানি হয়। এছাড়া স্বল্প পরিসরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও গ্রীস, হংকং, যুক্তরাজ্য, ব্রনাই, বাহরাইন, ইতালী, কম্বোডিয়া, কুয়েত, মায়ানমার, মালদ্বীপ, নেপাল, ওমান, পোলান্ড, কঙ্গো এবং ভিয়েতনামে আলু রফতানি হয়। তবে, এবার রাশিয়ার বাজারে আলু রফতানির বিশেষ সুবিধা কাজে লাগাতে চায় দেশের রফতানিকারকরা। এছাড়া নতুন করে বিভিন্ন দেশে আলু রফতানির চুক্তি শুরু করেছে ব্যবসায়িরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সুত্র জানায়, এ মৌসুমে দেশে ৪ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আলু আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে। আবাদ বেশি হয়েছে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায়। এরমধ্যে রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টরে এবং রাজশাহী বিভাগে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে। সবমিলিয়ে দেশে এবার আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮৭ লাখ টন নির্ধারণ করা হলেও ফলন ভাল হওয়ায় তা এক কোটি টন ছুঁতে পারে। এর সঙ্গে গত মৌসুমের মজুদ আলু রয়েছে প্রায় ২০ লাখ টনের বেশি। বাজারে সরবরাহ বাড়ায় আলুর  দরপতন ঘটেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top