সকল মেনু

রাবিতে ভাংচুরে ছিল ‘ছাত্রদল-শিবির’

 রাজশাহী প্রতিনিধি,হটনিউজ২৪বিডি.কম:  বিশ্ববিদ্যালয়ে গত রোববার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর ক্যাম্পাসে ভাংচুরের যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলকর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকোর্স বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এই অভিযোগ তুলেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্র হাতে  চড়াও হয়ে সমালোচনার মুখে থাকা ছাত্রলীগ তাদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে শিবির নেতাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা করেছে। ছাত্রদলের এক নেতা ভাংচুরের জন্য শিবিরকে দায়ী করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিবির নেতারা। রোববার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশ চড়াও হওয়ার পর ভাংচুরে ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেদিন দুপুরে হামলার পর সহস্রাধিক আন্দোলনকারী কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর ভিতরে আটকা পড়েন, সেখানে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র আয়তুল্লাহ খোমেনীও ছিলেন। পরে আন্দোলনকারীদের মতো স্লোগান দিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে কয়েকটি আবাসিক হল থেকে মিছিল বের হয়। ওই মিছিল থেকে কয়েকটি ভবনে ভাংচুর চালানো হয়। ভাংচুর হয় শিক্ষকদের আবাসিক এলাকা জুবেরী ভবনেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সাখাওয়াত হোসেন হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, দুপুর ১টার দিকে পুলিশ যখন শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেয়। তখন একটি দল জুবেরী ভবনে ভাংচুর চালায়। “যারা ভাংচুর চালিয়েছে, আমি তাদেরকে কোনো দিন ক্যাম্পাসে দেখিনি। এরা কখনো ছাত্র হতে পারে না। তবে সেখানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কয়েকজন নেতাকে দেখতে পেয়েছি।” আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ও ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আয়তুল্লাহ খোমেনী হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, “আমরা কোনো ভাংচুর চালাইনি। যে কয়েকটি ভবনে ভাংচুর চালানো হয়েছে, তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।” “যারা কয়েক মাস ধরে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করেছিল, সেই মহলটির ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীবেশে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছে।” ভাংচুরের জন্য ‘তৃতীয়’ একটি মহলকে দায়ী করে এতে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন খোমেনী। ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিন হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, “ভাংচুরের সময় ছাত্রদল ও শিবিরের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে আমরা দেখেছি। “সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভিতর ওই মহলটি অবস্থান করছিল। আর তারাই সুযোগ বুঝে ওই ভাংচুর করেছে।” এই বিষয়ে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রবিউল করিম রবিন হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, তাদের কোনো কর্মী ভাংচুরে অংশ নিলেও আন্দোলনকারীদের অংশ হিসেবে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছেন তারা। “ভাংচুর কিংবা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাব এমন কোনো নিয়ত’ ছিল না। কিন্তু পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার পর আমাদের বিক্ষুব্ধ কিছু ছেলে সোহরাওয়ার্দী, মমতাজ উদ্দিন কলা ভবন, ডিনস কমপ্লেক্স ভাংচুরে অংশ নিয়েছিল।” সেদিন আহত আলোকচিত্রী গুলবার আলী জুয়েল হটনিউজ২৪বিডি.কমকেবলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে তার ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী। ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরাফাত রেজা আশিক আন্দোলনে তার সংগঠনের নেতাদের থাকার কথা স্বীকার করলেও ভাংচুরে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।  তিনি হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, “আন্দোলনে আমাদের নৈতিক সমর্থন ছিল এবং আমাদের নেতা-কর্মীও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দাবি আদায়ে আন্দোলন করছিল।”
ভাংচুরে ছাত্রশিবির জড়িত ছিল দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা জেনেছি ভাংচুরে ইসলামী ছাত্রশিবির এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত রয়েছে।”

এই অভিযোগ অস্বীকার করে শিবিরের মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউদ্দিন বাবলু হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, “কারা কিভাবে হামলা করেছে, তা দেশবাসী পত্র-পত্রিকা ও টিভির মাধ্যমে দেখেছে। এরপরও শিবিরকে জড়িয়ে ভাংচুরের অভিযোগ ও মামলা করা রাজনৈতিক হয়রানি মাত্র।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দিনও মনে করেন, আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভাংচুর করেনি।

তিনি হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, “ভাংচুর চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করেছে গুটিকয়েক ছাত্র সংগঠন।”

ভাংচুরকারীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top