সকল মেনু

মন্ত্রিসভায় আত্মীয়ের ঠাঁই নেই

 নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ১৩ জানুয়ারি :  তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার বিকেলে বঙ্গভবনের দরবার হলে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের ৪৯ সদস্যের মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে ২৯ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী শপথ গ্রহণ করেন। তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কিন্তু এবার প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের কোন আত্মীয় ও নিকটাত্মীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পায়নি। শুধুমাত্র বেয়াই এবং মেয়ের শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ব্যতীত। তিনি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী এর আগে  নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন কারা তাঁর আত্মীয় কারা আত্মীয় নয়! সে হিসেবে মেয়ের শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন নেই সেই আত্মীয়ের তালিকায়।

গত ২৭ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা চৌরাস্তা সংলগ্ন বালুর মাঠে প্রথম নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর আত্মীয়ের তালিকা তুলে ধরে বলেন, পঁচাত্তরে খুনিদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আমি ও আমার বোন রেহানা, আমাদের সন্তান, নাতি-নাতনি ও জামাই ছাড়া আমার আর কোনো আত্মীয় নেই। এর বাইরে কেউ যদি আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দেয়, আমি তা বরদাশত করব না।

প্রসঙ্গত, এবার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। এখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী। সংসদের হুইপ নূর-এ আলম চৌধুরীর ভোট ভাই। রক্ত আত্মার আত্মীয়তার সূত্রে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফুতো ভাইয়ের ছেলে।

এর একদিন পর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য খণ্ডন করে ২৯ ডিসেম্বর ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে বলেন, আমার দাদি ফাতেমা বেগম ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বড় বোন। সেভাবেই আমাদের পরিবারের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের আত্মীয়তা। সেই সূত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আত্মীয় হন। ভাইবোন আত্মীয় হলে আমরাও আত্মীয়।

তবে এর বাইরে বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিকটাত্মীয় রয়েছেন। তারা হলেন- বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ নাসেরের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ হেলাল। বোনের ছেলে মেয়েদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর ছিলেন ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি। তার দুই ছেলে শেখ ফজলে শামস ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি। তাপস দুইবার ঢাকা-১২ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি।

বঙ্গবন্ধুর আরেক ভাগ্নে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বর্তমানে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য ও শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ট জন বলে পরিচিত। তিনি গোপালগঞ্জ-২ আসন থেকে পর পর কয়েকবার নির্বাচিত এমপি। এর আগে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ছিলেন। শেখ ফজলুল হক মনির মৃত্যুর পর এই পরিবারের প্রধান হন শেখ সেলিম। তাদের অন্য ভাই হলেন শেখ মারুফ।

এছাড়া বরিশাল-১ আসন থেকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। মন্ত্রিসভায় শপথের আগে তিনি ছিলেন বিশেষ দৌড়ে। কিন্তু অবশেষে ঠাঁই মেলেনি মন্ত্রিসভার গুডবুকে। তিনি কিন্তু সম্পর্কে ব্যরিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের মামা।

তবে গতকাল মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা, পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানার পুত্র রেদোয়ান সিদ্দিক ববিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top