সকল মেনু

আ.লীগ চূড়ান্ত সিন্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি

 আছাদুজ্জামান, ঢাকা, ৮ জানুয়ারি :  নতুন নির্বাচিত সাংসদদের শপথ বা সরকার গঠন ২৪ জানুয়ারির আগে না পরে হবে এ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহজোট সরকার। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নেতারা দুই পক্ষে মতামত পোষণ করেছেন বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়। বৈঠক সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতাদের একটি পক্ষ আইন ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় ২৪ জানুয়ারির পরেই সংসদ সদস্যদের গেজেট, শপথ ও সরকার গঠন করার যুক্তি তুলে মত দিয়েছেন। আরেক পক্ষ ২৪ জানুয়ারির আগেই বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের পর অর্থাৎ স্থগিতকৃত আসনে নির্বাচন ১৬ জানুয়ারি হলে গেলে ১৮ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে সরকার গঠনের মত দিয়েছেন।সূত্র আরো জানায়, দশম জাতীয় সংসদে এবার জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠিত হবে। সেক্ষেত্রে বিরোধী দল কে হচ্ছে সেটা নিয়ে কোনো সাংবিধানিক বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি হবে না। কারণ জাতীয় ঐক্যমেতর সরকার গঠন হলে বিরোধী দল থেকেও কয়েকজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য মন্ত্রীসভায় থাকবে।
এক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নীতিনির্ধারক নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে নির্বাচিত দলগুলো থেকে মন্ত্রণালয়ের বণ্টন চূড়ান্ত করেছেন। এবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে-১ জন, ওয়ার্কাস পার্টি থেকে ১ জন, জেপি ( মঞ্জু) ১ জন, বিএনএফ থেকে ১ জন এবং জাতীয় পার্টি থেকে ৫ জনকে মন্ত্রীত্ব দেওয়া হবে।তবে এ ব্যাপারে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পার্টি চেয়ারম্যানের সহধর্মিনী রওশন এরশাদের সঙ্গে গণভবন এক বৈঠক করবেন। বৈঠকটি সন্ধ্যার পর গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে গণভবন সূত্র নিশ্চিত করেছে।সেক্ষেত্রে আজ জাতীয় পার্টির সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মন্ত্রীসভায় জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে কারা মন্ত্রীসভায় থাকবেন এবং কত জন থাকবেন তার হিসাব-নিকাশের ভাগবাটোয়ারা চূড়ান্ত হবে বলে জানা যায়। এদিকে মন্ত্রীপরিষদ সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের জন্য মন্ত্রীদের জন্য শপথের ফোল্ডারও ইতোমধ্যে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচনের ফল গেজেট আকারে প্রকাশের তিন দিনের মধ্যে শপথের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করলেই নতুন সরকারের শপথ নেওয়াটা সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়।দলীয় একটি সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সম্পন্ন ২৪ জানুয়ারির আগে নতুন সাংসদদের গেজেট প্রকাশে আইনগত জটিলতা আছে। কারণ সংবিধানিক ধারা অনুসারে, বর্তমান সংসদ ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বহাল আছে। এজন্য এ ব্যাপারটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম ইতোমধ্যে কয়েকজন ভারতীয় লোকসভার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন।  সেক্ষেত্রে এই সরকারের মেয়াদ শেষের আগেই শপথ নেওয়া যায় কিনা কিংবা কবে নেওয়া যায় এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদকে।দলীয় সূত্র আরো জানায়, নবনির্বাচিত সরকারের মন্ত্রীসভা প্রাথমিকভাবে ৩৫-৪০ সদস্য বিশিষ্ট হবে। সেক্ষেত্রে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে উপ এবং প্রতিমন্ত্রী যোগ হতে পারে।এছাড়া বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকেই নতুন স্পিকার হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। তাকে নতুন স্পিকার করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকায় ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সংরক্ষিত আসনে নারী সাংসদ নির্বাচন হবে। শিরীন শারমিন চৌধুরীকে সংরক্ষিত আসনে সাংসদ নির্বাচন করা হবে।তিনি সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। সংসদ কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী, বর্তমান স্পিকার সাংসদ নির্বাচিত হলে তিনি নিজের শপথ নিজেই নেবেন বলে জানা যায়।এর আগে ২ জানুয়ারি আইন উপদেষ্টা শফিক আহমেদের রাজাবাজারের বাসভবনে এ ব্যাপারে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক জন প্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, আইনসচিব শহীদুল হক এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাউছার উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top