সকল মেনু

আগামীকাল লালমোহনে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল যৌথবাহিনী-আ’লীগ-বিএনপির ত্রিমূখী সংঘর্ষ

ভোলা প্রতিনিধি : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদ বীর বিক্রমকে আটক কারার প্রতিবাদে লালমোহন উপজেলা বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিলে যৌথবাহিনী-আ’লীগ-বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংর্ঘষের ঘটনায় বেশ কয়েকটি যানবাহন ও বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাংচুরসহ উভয় দলের ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়। ২৯ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে উপজেলা বিএনপির আগামীকাল সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে।
প্রত্যাক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন বীর বিক্রমকে আটকের প্রতিবাদে লালমোহন উপজেলা বিএনপি ২৯ ডিসেম্বও রোববার সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করতে চাইলে সেখানে যৌথবাহিনী তাতে বাঁধা দেয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সাথে বাক-বিতন্ডের এক পর্যায়ের একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে যৌথবাহিনী-বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে এক পর্যায়ে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা যৌথবাহিনীর সাথে একত্রিত হয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করলে তারা পিছু হটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী এই ত্রিমূখী সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় দলের অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়।
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির কর্মীরা ২টি বাস ও ২টি লেগুনা ভাংচুর করে। অপরদিকে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা উপজেলা বিএনপির কার্যালয়সহ দলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর ও লুট-পাট চালায় বলে দাবী করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লালমোহনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মেজর হাফিজকে আটকের প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার লালমোহনে সকাল-সন্ধা হরতাল আহ্বান করেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার নিজ বাস ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং মেজর হাফিজকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ভোলা জেলা যুবদল ও ছাত্রদল রাত ৮টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া করে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়।
এছাড়া মেজর হাফিজকে আটকের প্রতিবাদে তাৎক্ষনিক লালমোহন ওয়েষ্টার্ণপাড়া, লর্ডহার্ডিঞ্জ, চতলা, রায়চাঁদ, আজাহার রোড এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। লর্ডহার্ডিঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল করায় আওয়ামী লীগ বিএনপির অফিস ভাংচুর ও লুটপাট করে বলে স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এদিকে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মার্শাল হিমু ও ছাত্রদল সভাপতি মিজানুর রহমান জানান, মেজর হাফিজকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এনায়েত কবীর জানান, মেজর হাফিজকে গ্রেফতারের ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে হরতালেল কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবুল হাছান রিমন জানান, বিএনপির ক্যাডারবাহিনী হঠাৎ তা-ব চালিয়ে বাজারে বাস ভাংচুর করে এবং কয়েকটি দোকানপাটে আঘাত করে। এসময় তারা চৌড়ান্তা মোড়ে ছাত্রলীগের অফিসে হামলা করতে গেলে সেখানে অবস্থানরত ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের প্রতিরোধ করে।
এ ব্যাপারে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২৯ ডিসেম্বর রোববার এর আগে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দীন ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নৌ-পথ, রেলপথ ও সড়ক পথে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি ঘোষণা করে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top