সকল মেনু

কোটালীপাড়ায় কর্মীসভায় শেখ হাসিনা যারা নির্বাচন বানচাল করতে চায় তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে

গৌরাঙ্গ লাল দাস, কোটালীপাড়া(গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি:
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন-ভোটের অধিকার জনগনের অধিকার,সেই অধিকার সকলে প্রয়োগ করবেন। যারা নির্বাচন বানচাল করতে চায় তাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। নির্বাচন জনগনের গনতান্ত্রীক অধিকার। জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবেনা বলেই  বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছে।
আজ শুক্রবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শহীদ মিনার চত্ত্বরে আওয়ামীলীগ আয়োজিত নির্বাচনী কর্মীসভায় প্রধান অতিথির ভাষনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন,রাজনীতি যদি হয় মানুষের জন্য,তবে কেন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে মানুষ হত্যা করা হয়। অবরোধের নামে মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়। বিরোধী দল অবোরোধ দিয়ে গরীবের পেটে লাথি মেরেছে। বোমা মেরে পুলিশ হত্যা করছে। রাস্তার পাশে লক্ষ লক্ষ গাছ কেটে ফেলছে।  যেখানে আমরা পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় বৃক্ষ রোপন করেছি,সেখানে বিরোধী দল গাছ কেটে পরিবেশ নষ্ট করছে। বিরোধী দল ক্ষমতায় আসে ধংস করতে সৃষ্টি করতে নয়।
বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে অশান্ত বেগম উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন-তিনি অবোরোধ দিয়ে মানুষকে অবরুদ্ধ করে বাসায় বসে টিভি দেখেন। মুরগির সুপ ও আয়েস করে পায়েশ খান। বাংলাদেশের মানুষ যখন শান্তিতে থাকেন তখন একজন মানুষ অশান্তিতে থাকেন তিনি হচ্ছেন অশান্তি বেগম। এ দেশে মিথ্যা কথা বলার জন্য যদি কাউকে পুরুষ্কার দেওয়া হয় তা হলে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে দেওয়া উচিত।
বিগত পাঁচ বছরের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন,আমরা এবার ক্ষমতায় এসে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। আগামী ২১ সালের মধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হবো। ৫৬টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছি। ৩৪টির কাজ চলছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা জনগনের দোড়গোরে পৌছে দিয়েছি। জনগন এই কমিনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ২৮ প্রকার ঔষধ পাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীরা দশম শ্রেনী পর্যন্ত বিনা মুল্যে বই পাচ্ছে। ছাত্রীরা বৃত্তি পাচ্ছে। আগামীতে ডিগ্রী পর্যন্ত ছাত্রীদের বৃত্তির ব্যাবস্থা করবো। ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। ইউনিয়নে ইউনিয়নে তথ্যসেবা  কেন্দ্র স্থাপন করেছি। এ সব তথ্যসেবা কেন্দ্রে অনেকের কর্মসংস্থানের সৃস্টি হয়েছে। এখন একজন  কৃষক দশ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারছেন।
নিজের দলের কথা বলতেগিয়ে শেখ হাসিনা বলেন-যে দল স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে, দেশের জন্য জীবন দেয়-সে দল ক্ষমতায় না থাকলে দেশের উন্নয় হয়না। বিএনপি সরকারের আমলে ছিল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে ভরপুর। আমাদের আমলে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক পথে সকাল ১১টা ১৩ মিনিটে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্ত্বরে নির্মীত আওয়ামীলীগ আয়োজিত কর্মীসভার মঞ্চে আসেন। সাড়ে ১১ টায় তিনি বক্তব্য শুরু করেন। ৩০ মিনিটের বক্তব্য শেষে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং জনসভায় যোগদেবার জন্য কোটালীপাড়া থেকে যাত্রা করেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় সংসদ সদস্য শেখ হেলাল,কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গির কবীর নানক,সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম,ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ,কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের উপদেষ্টা কে এম চাঁদ মিয়া,জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক চৌধুরী এমদাদুল হক,কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস,সদর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাচ্চু,টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়াম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, আওয়ামীলীগ নেতা লিয়াকত আলী মোল্লা,কমল সেন,মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক,উপজেলা আওয়ামীলীগেরে সাধারন সস্পাদক এস এম হুমায়ুন কবীর,  যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান হাওলাদর,গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া,পৌর মেয়র এইচ এম অহিদুল ইসলাম,সাবেক মেয়র শেখ কামাল হোসেন,ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান খান মিলন,সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আয়নাল হোসেন,মহিলা আওয়ামীলীগ সভানেত্রী রাফেজা বেগম,যুবলীগের আহবায়ক মতিয়ার রহমান হাজরা,ছাত্রলীগের আহবায়ক বাবুল হাজরা,যুগ্ম আহবায়ক নজরুল ইসলাম মন্নু,শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি হায়দার হাজরা,মেহেদী হাসান মুন,কাইয়ুম শেখ,ছোটন চৌধুরী,ভিপি নাজমুল ইসলাম চপল বক্তব্য রাখেন।
সকাল ১০টায় কর্মীসভা শুরু হবার কথা থাকলেও ৮টার মধ্যে কর্মীসভাস্থল কানায় কানায় পূর্ন হয়ে যায়। ১০ টার মধ্যে কর্মীসভাস্থল জনসভায় পরিনত হয়। আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে আশার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় নেত্রীকে করতালি ও হর্সধ্বনীর মাধ্যম্যে বরন করে নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,আমরা দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য নূন্যতম একটি টিনের ঘরের ব্যবস্থা করে দিতে চাই। এ দেশের মানুষ আর কুড়ে ঘরে থাকবে না। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নোয়াখালী থেকে গুচ্ছ গ্রাম কর্মসূচীর শুরু করেছিলেন। আমরা ক্ষমতায় এসে সেই কর্মসূচী আবার চালু করেছি।
বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন,তাদের আন্দোলন যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা। জিয়াউর রহমান ১১হাজার যুদ্ধাপরাধীকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন।জাতীর পিতার খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকুরি দিয়ে পুরুস্কৃত করেছিলেন। কাদের মোল্লার ফাসিঁ হওয়া বিরোধী দলীয় নেত্রী মর্মাহত হয়েছেন। তার যত আন্দোলন সবকিছুর মূলে রয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়াবাসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন আপনারাই আমার আপনজন। আপনাদের মাঝে আমি আমার আপনজনকে খুজে পাই। বারবার আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আগামী ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে আপনারা আমাকে আবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top