সকল মেনু

সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ; প্রক্রিয়াজাতের অভাবে অসহায় ৫ শতাধিক পাম চাষী

 গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ১৫ ডিসেম্বর:  পামের চাষ করে অসহায় হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধার পাম চাষীরা। সফলতার স্বপ্ন দেখানো পাম এখন তাদের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফল প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা না থাকায় অজানা আশংকায় দিন কাটছে তাদের। প্রায় ১২ হাজার পাম গাছ নিয়ে এখন বিপাকে গাইবান্ধার ৫ শতাধিক চাষী। তাই সম্ভাবনাময় পাম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার কথা ভাবছেন কৃষকদের অনেকেই।

পেশায় পল্লী চিকিৎসক হলেও কৃষি নিয়ে সব সময় ভাবেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের হাসান আলী। সরকারী-বেসরকারীভাবে প্রচার প্রচারনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ধানের জমিতে পামচাষ শুরু করেন তিনি। তাকে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিলো ধানের চেয়ে পাম চাষে ফলন বেশী হবে। তাই সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে নিজের ৩ বিঘা জমিতে ধানের বদলে পাম চাষ শুরু করেন। লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ১শ’ পাম চারা লাগান তিনি। অনুকুল আবহাওয়া এবং তার পরিবারের সদস্যদের হাড়ভাঙা খাটুনির ফলে পামের ফলনও হয় বেশ ভালো হয়।

হাসান আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম জানান, চারা লাগানোর আড়াই বছর পর পামের ফলন আসলেও কোন লাভ হয়নি। এখন নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পামের ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমনকি বেশকিছু গাছ মরেও গেছে। হাসান আলীর অপর ছেলে নুরুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের সহযোগিতা চেয়েও কোন লাভ হয় নি।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক পর্যন্ত গিয়েছি তারা কোন সহযোগিতা না করে ফিরিয়ে দেন। বাধ্য হয়ে বাজারের ওষুধের দোকানীদের সাথে পরামর্শ করে জমিতে ওষুধ ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাতেও কোন লাভ হচ্ছে না।

এদিকে পামের ফল থেকে কোন প্রক্রিয়ায় তেল বের হবে তাও জানে না পাম চাষীরা। সে সময় যেসব বেসরকারী সংগঠন কৃষকদের পাম চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে সেই সংগঠনগুলো এখন পাম চাষীদের পাশে নেই। এ পরিস্থিতিতে প্রায় ১২ হাজার পাম গাছ নিয়ে হাসান আলীর মতো অজানা আশংকায় দিন কাটাচ্ছেন পাচ শতাধিক পাম চাষী।

সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা সভাপতি আহসানুল হাবীব সাঈদ বলেন, সরকারী উদ্যোগে পামের ফল প্রক্রিয়াজাত না করলে পামচাষীদের লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান হবে। সম্ভাবনাময় এই পাম চাষকে লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে না পারলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মীর মো. আব্দুর রাজ্জাক চাষীদের অসহযোগিতার কথা অস্বীকার করে বলেন, পাম ফল প্রক্রিয়াজাতের জন্য প্রয়োজনীয় মেশিন না থাকায় চাষীদের কোন পরামর্শ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে পাম প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা করা হলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

লোকসান থেকে বাঁচতে গাইবান্ধার ৫ শতাধিক পামচাষী এখন তাকিয়ে আছেন সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের দিকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top