সকল মেনু

রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৫ বছরে নিহত ২০০০; তথ্য আইন ও সালিশ কেন্দ্র

xPolitices20131106015943.jpg.pagespeed.ic.9JrCgxu58q নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ৬ নভেম্বর:  দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় গত ১৫ বছরে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ২৩৪ জন। রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন, হরতাল, অবরোধ, নির্বাচনী সহিংসতা এবং দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য থেকে এ পরিসংখ্যান জানা গেছে।
আসক’র তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা গেছেন ২ হাজার ২৩৪ জন। এর মধ্যে ১৯৯৯ সালে ২৩৩, ২০০০ সালে ২০৮, ২০০১ সালে ৫০০, ২০০২ সালে ৩১০, ২০০৩ সালে ২০৩, ২০০৪ সালে ৫২, ২০০৫ সালে ৩৪, ২০০৬ সালে ১২০, ২০০৭ সালে সাতজন, ২০০৮ সালে চারজন, ২০০৯ সালে ৪২, ২০১০ সালে ৭৬, ২০১১ সালে ৫৮, ২০১২ সালে ৮৪ এবং ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৩০৪ জন নিহত হয়েছেন। ২২ বছরের মধ্যে প্রতিটি সরকারের শেষ বছরে অর্থাৎ নির্বাচনী বছরে সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে ১৮ জন, ১৯৯৬ সালে ৪৯, ২০০১ সালে ৫০০, ২০০৬ সালে ১২০ এবং ২০১৩ সালের গত ১০ মাসে ৩০৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ২২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে। ওই দুই বছরে ১১ জন মারা গেছেন।

আওয়ামী লীগের শাসনামালে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মারা গেছেন ৫৬৪ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের দলীয় কোন্দলেই মারা গেছেন ১৩০ জন।

নির্দলীয় সরকারের দাবিতে চলতি বছরের ২৭ থেকে ২৯ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতালেই ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর আগে এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসের সহিংসতায় ২৮৯ জন মানুষ প্রাণ হারান। এ বছর নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৫ জন মারা গেছেন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে। আর ১৮ জন মারা গেছেন জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে। হরতালের মধ্যে রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা গেছেন ১৩৮ জন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে ১৩ জন এবং আওয়ামী লীগ ও জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে আরও পাঁচজন মারা গেছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলে ১৫ এবং বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছয়জন মারা গেছেন।

এর আগে ১৯৯৬ সালের জুনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। সে সময় থেকে ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮৯৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে ২০০১ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল। ওই দুই মাসে ১৩১ জনের প্রাণহানি ঘটে।
বিএনপির শাসনামালে ২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে। সে সময় থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় ৮৭২ জন প্রাণ হারান। এর মধ্যে সন্ত্রাসী হামলায় আওয়ামী লীগের ২০০ নেতা-কর্মী মারা যান। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় মারা যান ২৪ জন।

এছাড়া আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে ৭৫ জন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ৭৫ জন, বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে ১০ জন ও আওয়ামী লীগের কোন্দলে ১৪ জন মারা যান। বাকিরা হরতাল ও অবরোধসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনে মারা গেছেন। সেবার ক্ষমতার শেষ সময়ে ২০০৬ সালে ১২০ জন প্রাণ হারান। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারান ৩৬ জন। হরতাল ও অবরোধে প্রাণ হারান ৩৫ জন।

এ ছাড়া ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সালের মে পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে রাজনৈতিক সংঘর্ষে ১৭৪ জন প্রাণ হারান।

সহিংসতা বন্ধ চায় স্বজনহারাদের পরিবার। গত ২৯ অক্টোবর বিএনপির টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালের তৃতীয় দিনে  মাগুরার মহম্মদপুরে রাজনৈতিক সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে মারা যান ছাত্রদলকর্মী মারুফ সরদার (২২) । তার বাবা আফসার সরদার বলেন, ‘রাজনীতি করতে গিয়ে সে প্রাণ হারিয়েছে। এভাবে যেন আর কাউকে প্রাণ দিতে না হয়।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top