কামাল হোসেন মাসুদ: নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলায় টাইলস মিস্ত্রির সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে প্রেমিকসহ স্বামীকে হত্যা করেছে স্ত্রী। এ ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিকসহ স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নিহতের স্ত্রী সুরমা আক্তার ওরফে বিবি আছিয়াকে (৩৮) ও তার পরকীয়া প্রেমিক উপজেলার লতিফপুর গ্রামের আফজাল সর্দার বাড়ির সামছুল হকের ছেলে আবুধাবি প্রবাসী মো.ইসমাইল (৩৫)।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিবুল্যা তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
বুধবার ভোর রাতে পুলিশ উপজেলার রফিকপুর গ্রামের চকোইয়াদের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মরদেহের ময়না তদন্ত শেষে বুধবার দুপুরে লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহত আব্দুল কুদ্দুস(৫১) উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রফিকপুর গ্রামের চকোইয়াদের বাড়ির মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে।
প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন জানান, নিহত কুদ্দুসের বসতঘরে টাইলস করার সময় তার স্ত্রী সুরমা আক্তার টাইলস মিস্ত্রি ইসমাইলের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। পরে ইসমাইল বিদেশ চলে যায়। বিদেশ চলে যাওয়ার পরও তাদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। গত ৬ সেপ্টেম্বর পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে ইসমাইল গোপনে দেশে আসে। এরপর সে পাশ্ববর্তী মোহাম্মদুপর গ্রামে তার এক দূরসম্পর্কের খালার বাসায় আত্মগোপনে থাকে। সেখান থেকে সে পরকীয়া প্রেমিক সুরমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। মঙ্গলবার রাতে কুদ্দুস ঘরের বাহিরে থাকাকালীন পরকীয়া প্রেমিক ইসমাইল ঘরে ঢুকে লুকিয়ে থাকে। রাত ১১ টার দিকে সুরমা ইসমাইলকে ঢেকে ছাদে নিয়ে যায়। নিচে নামার সময় ইসমাইল ছাদে থাকা বৈদ্যুতিক সকেটে লাইন দিয়ে তার নিয়ে নিচে নামে। তারপর কুদ্দুসের শয়ন কক্ষে ঢুকে তার স্ত্রী সুরমা স্বামীর পায়ে বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে এক মাথার সুইচের সাথে বৈদ্যুতিক কানেকশন দিয়ে স্বামীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।
তিনি জানান, পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক এক ঘন্টা পর সুরমা চিৎকার শুরু করে বলে তাকে আটক করে ডাকাত দল তার স্বামীকে হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার ভোর রাতের দিকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। একই সাথে ভিকটিমের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক স্ত্রী জানায় পরকীয়া প্রেমিকসহ সে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পরে তার ভাষ্যমতে পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ তদন্তে নেমে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে কুদ্দুস হত্যা মামলায় দায় স্বীকার করে নিহতের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিক ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তার উদ্ধার করেছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।