সকল মেনু

চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন টার্মিনালে বড় জাহাজ

হটনিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রাম বন্দরের নতুন নির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে (পিসিটি) প্রথমবারের মতো বড় আকারের জাহাজ ভেড়ানো হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে টার্মিনালটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভেড়ানো শুরু হলো। রোববার নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমভি মেঘনা ভিক্টোরি জাহাজটি ভেড়ানোর মধ্য দিয়ে পিসিটিতে জাহাজ ভেড়ানোর উদ্বোধন করেন।

এদিকে, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে ৩৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার বড় আকারের জাহাজ পণ্য নিয়ে ভিড়বে বলে জানা গেছে। রোববার রাজধানীর মতিঝিলে এক মতবিনিময় সভায় পায়রা বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, এতদিন চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে সর্বোচ্চ ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারত। চ্যানেলের গভীরতা কম থাকায় এর চেয়ে বড় আকারের জাহাজ জেটিতে আনা সম্ভব হতো না। অবশ্য জানুয়ারিতে বন্দরের অপর টার্মিনাল চিটাগং কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) পরীক্ষামূলকভাবে বড় আকারের একটি জাহাজ ভেড়ানো হয়েছিল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বে বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সামনে এগিয়ে যেতে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করি, ২০৪১ সালের আগেই আমরা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাব।

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, এইচএসবিসি ব্যাংকের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মাহবুব-উর-রহমান, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম। বন্দর সূত্র জানায়, নতুন টার্মিনালটিতে সীমিত আকারে পণ্য খালাস করা হচ্ছে। অপারেটর নিয়োগ না হওয়ায় পিসিটি এখনো পুরোদমে চালু হয়নি। ১৫ নভেম্বর থেকে এখানে সরকারিভাবে আমদানি করা চালের ছোট ছোট জাহাজ ভেড়ানো হচ্ছিল। ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ নিয়মিতভাবে পণ্য খালাস শুরু করলে বন্দরের সক্ষমতা আগের চেয়ে বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি আরও গতিশীল হবে।

রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় জানানো হয়-আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে পায়রা বন্দরে ৩৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার বড় আকারের জাহাজ পণ্য নিয়ে আসবে এবং আগামী এপ্রিলের মধ্যে জোয়ারের সুবিধা নিয়ে ১২ মিটার গভীরতার ৪০-৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতার জাহাজ ভিড়তে পারবে। এর আগে শেষ করা হবে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কার্যক্রম। এপ্রিলের শেষ অথবা মে মাসের প্রথমে এ বন্দরের প্রথম টার্মিনালও উদ্বোধন করা হবে। এসব কার্যক্রম শুরু হলে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দরকে ছাড়িয়ে যাবে পায়রা বন্দর। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সাড়ে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারে।

বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার আয়োজন করে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে অংশ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বন্দর ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা দূর করার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে যেভাবে হয়রানি হতে হয়, সেটি যেন পায়রা বন্দরে না হয়। পায়রা বন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথগুলোর নাব্য সংকট দূর করার কথাও বলেন তারা। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল, সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ইকবাল আলী শিমুল, কোস্টাল শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ মাহফুজ হামিদ, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মামুনুর রশিদ, কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top