বগুড়া অফিস, ৮ অক্টোবর: বগুড়ায় ৪ শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই হাজারের বেশী শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দাবি আদায়ের নামে শ্রেণী কক্ষে তালা মারায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত এসব শিক্ষকের নামের তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা ২য় শ্রেণীর গেজেটেড এবং সহকারি শিক্ষকদের উচ্চতর বেতন স্কেল প্রদানের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে সারাদেশে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি শুরু করে। এ সময়ের মধ্যে তাদের দাবি আদায় না হওয়ায় ১ অক্টোবর বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ঢাকায় অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সেই অনুযায়ি গত ১ অক্টোবর বগুড়া জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ঢাকায় অনশন কর্মসূচিতে যোগ দেয়। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের সকল সিএল ছুটি বাতিল করা হয় এবং তালা ঝুলানো বিদ্যালয়ের নাম এবং ওই সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নামের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।সেই অনুযায়ি বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ৯৬৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪০৭টি বিদ্যালয়ে তালা ঝুলানো ছিল। ওই দিন এসব বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক আসেননি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিও ছিলনা। ১ অক্টোবর অনশনরত শিক্ষদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পরদিন শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে ফিরে আসে। ১ অক্টোবর বিদ্যালয়ে তালা ঝুলানো থাকলেও ওই সব শিক্ষকরা পরদিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন এবং যথারীতি ছাত্র উপস্থিতির হার বিদ্যালয় রেজিস্টারে উল্লেখ করে কাগজে কলমে বিদ্যালয় বন্ধ ছিলনা মর্মে দেখিয়েছেন। বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১ অক্টোবর যে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলানো ছিল এসব বিদ্যালযের তালিকা ওই দিনই ই-মেইলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ি পাঠানো হয়েছে। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব জাজরিন নাহার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি দাওয়া ইতিমধ্যেই জনপ্রশাসমন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন।
তার পরেও বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সমাবেশ করা সরকারি চাকুরি বিধি পরিপন্থি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমতাবস্থায় ১ অক্টোবর তালা ঝুলানো বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর চিঠিটি বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পৌছেছে। বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠির প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই জেলার সকল উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।