সকল মেনু

এখনো অবরুদ্ধ জাবির রেজিস্ট্রার-ডেপুটি রেজিস্ট্রার

JU-BG20131006043003 জাবি করেসপন্ডেন্ট,হটনিউজ২৪বিডি.কম,জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: বিএনপি ও সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরপন্থি শিক্ষকদের হাতে ১৪৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থা পার করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবু হাসান। এদিকে, দুই রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ রাখার প্রতিবাদে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছেন অফিসার্স সমিতি। এছাড়া উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষকরা। আবার এর প্রতিবাদে উপাচার্যও তার স্ত্রীকে নিয়ে বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। তবে উপাচার্য নিয়মিত অফিস করছেন এবং সভা, সমাবেশে যাচ্ছেন। শিক্ষকদের এই আন্দোলনের প্রক্রিয়া অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে ‘শিক্ষা অধিকার মঞ্চ’। আর ‘শিক্ষক মঞ্চ’ বলছে, এই আন্দোলনের কোনো যৌক্তিক ভিত্তিই নেই। খুব শিগগিরই সংকট কেটে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় আবার সচল হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। কোনো কারণ ছাড়াই আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হককে অপসারণ এবং অপর দুই অনুষদের ডিন নিয়োগ দেওয়ার প্রতিবাদে রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ‘সাধারণ শিক্ষক ফোরাম’-এর সদস্য সচিব ও বিএনপিপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক কামরুল আহসান। ‘তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিয়োগ দেবেন না’ বলে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের আলোচনা সভায় একটি চুক্তি সই হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগেই আইন, বিজনেস স্টাডিজ ও জীববিজ্ঞান অনুষদেও ডিন নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে উপাচার্য শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে হওয়া চুক্তির ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা। সোমবার আইন অনুষদের ডিন ও আইন ও বিচার বিভাগের সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন হিসেবে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল বায়েস ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে অধ্যাপক মো. রফিকুন নবীকে নিয়োগ দেন উপাচার্য। এর প্রতিবাদে গত সোমবার দুপুর দুইটা থেকে রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবু হাসানকে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে, আবার রেজিস্ট্রারদের অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করছে অফিসার্স সমিতি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রেজিস্ট্রার তো আসলে কোনো সিদ্ধান্ত দেন না। তিনি শুধু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন। আন্দোলনকারী শিক্ষকরা প্রথমে উপাচার্য তারপর রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।’ আন্দোলনকারী শিক্ষকদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিয়োগের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে কিছু জানানো হয় নি। নিয়োগ না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ও চলবে না। ৩টি অনুষদের ডিন পদে যাদের নিয়োগে দেওয়া, তারা অনেকেই সিনিয়র শিক্ষক। এদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও ছিলেন।’ উপাচার্য বলেন, ‘ডিন নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা মানবিকতার পরিপন্থি। কর্তৃপক্ষ ডিন নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও নিয়মের বাইরে কোনো কাজ করেনি। এমতাবস্থায় রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখা আইনের পরিপন্থি।’ উপাচার্য অবিলম্বে রেজিস্ট্রারকে অবরোধ মুক্ত করে তার স্বাভাবিক প্রশাসনিক কাজকর্ম করার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এবং উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানরত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।তবে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলছেন, ‘আমরা একটি অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখতেই রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ রাখছি। এখন যদি উপাচার্য বলেন, অনৈতিক কাজটি তারা করবেন না; তাহলে এ মুহূর্তেই তাদের মুক্ত করে দেওয়া হবে।’ বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করায় গত মঙ্গলবার দুপুরে কর্মবিরতির সঙ্গে উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে ‘সাধারণ শিক্ষক ফোরাম’ ব্যানারের বিএনপি ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরপন্থি শিক্ষকেরা। এর প্রতিবাদে রাত ১০টায় উপাচার্য তার সহধর্মিনীকে নিয়ে বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে যান।

রোববারও তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। তবে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভা, সমাবেশ ও অফিস করছেন। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করছেন, সে প্রক্রিয়াটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেছে ‘শিক্ষা অধিকার মঞ্চ’। তাদের মতে, শিক্ষকদের ‘ক্লাস বর্জন’, ‘অবরোধ’ ইত্যাদি কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আন্দোলনকারী শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আচার্যকে তারা অনুরোধ করেছেন, যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাসংক্রান্ত সব কার্যক্রম সচল ও স্বাভাবিক করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। অপরদিকে, শিক্ষকদের এই আন্দোলনের কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছে ‘শিক্ষক মঞ্চ’।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top