সকল মেনু

পেনড্রাইভে রায়ের তথ্য ফাঁস : ডিবি

47140_Salauddin Kadir Chowdhury ঢাকা, ৪ অক্টোবর (হটনিউজ২৪বিডি.কম) :  পেনড্রাইভের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের কপি ফাঁস হওয়ার দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিএমডির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুালের চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মো. নয়ন আলী মোটা অংকের টাকার লোভে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের সহকারী মেহেদী হাসানের কাছে পেনড্রাইভের মাধ্যমে রায়ের তথ্য তুলে দেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিবি (দক্ষিন) উপ কমিশনার প্রলয় কৃঞ্চ রায় ও ডিএমপির উপ কমিশনার হাজী মাসুদুর রহমান। মনিরুল ইসলাম বলেন, ডিবির পরিদর্শক বাদী হয়ে আইসিটি অ্যাক্টে ৫৪, ৫৭ ও ৬৩ ধারায় শাহবাগ থানার মামলায় তিনজনকে আসামী করে। এই মামলায় এজাহার নামীয় নয়ন ইতমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। সে দেড়বছর আগে নিয়োগ পায়। অপর কর্মচারী ফারুক ও ফখরুল ইসলামের সহকারী মেহেদী হাসানসহ অজ্ঞাত নামীয়দের আসামী করা হয়েছে। এরমধ্যে ফারুক ও মেহেদী পলাতক রয়েছে। তদন্ত চলমান থাকায় জড়িত ও সন্দেভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, প্রয়োজনে তাদেরকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।

তিনি বলেন, নয়ন নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে সহকর্মী ফারুকের মাধ্যমে মেহেদীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন সময়ে তথ্য ফাঁস করেছে। সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী এমপির রায়ের আগে ব্যারিস্টার ফখরুলের সহকারী মেহেদী ভুল তথ্য দিয়ে তার কাছ থেকে তথ্য নিতো বলে জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন জানিয়েছে। তিনি বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে ট্রাইব্যুনাল ভবন পরিদর্শন, কম্পিউটার জব্দ করে আইসিটি বিশেষজ্ঞ দ্বারা বিশ্লেষন ও সিসিটিভি পর্যালোচনা করেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে কাকরাইল রাজমনি হোটেলের কাছে ব্যারিস্টার ফখরুলের অফিসের তল্লাশী করে দুটি সিপিইউ ও কিছু সিডির কপি জব্দ করেন। তিনি বলেন, ফারুক ও মেহেদী মিলে নয়নকে শুনানীর তারিখের কথা বলে কম্পিউটার থেকে একটি ফোল্ডার বের করে দিতে বলে। পরে নয়ন ফোল্ডারটি পাচার করার পর যখন দেখে যে এটি রায় তখন সে সেটি ফেরত চাইলে তাকে ভয় দেখানো হয়। ১৭২ পাতার রায়ের মধ্যে ১৬৫ পাতা পাচার হয়। বাধ্য হয়ে নয়ন চুপ থাকে বলে আমাদের জানিয়েছে। এরমধ্যে কিছু টাকার লেনদেন হলেও সেটির পরিমাণ আমরা এখনও জানতে পারেনি। আশা করছি খুব শিগগিরই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, নয়ন ও ফারুকসহ প্রায় ১৫ জন কর্মচারী ট্রাইব্যুালের একটি ফাঁকা জায়গায় ব্যারাক করে সেখানে বসবাস করতো। সে হিসেবে কৌশলে সেখানকার কর্মচারীদের টাকার লোভ দেখিয়ে এমন অন্যায় কাজ করার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, এমএস ওয়ার্ড এর ফাইলটি পেনড্রাইভের মাধ্যমে ফাঁস করে মেইলের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে সেটি পিডিএফ ফরম্যাট করে যুক্তরাজ্য থেকে ওয়েবসাইট থেকে আপ করা হয়েছে বলে ধারণা করছি। তবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশ থেকেও বিদেশী ঠিকানায় আপ করা হয়ে থাকতে পারে। সালাহউদ্দি কাদেরের পরিবার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত চলছে এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা সমীচিন নয়। তবে আমরা তদন্ত করে দেখছি বেনিফেশিয়ারি হিসেবে তাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা। এরআগে ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, যদি তারা (ডিবি) কোনো কাজের জন্য এসে থাকে, তবে তাদের সহযোগিতা করতে আমি রাজি। কিন্তু আমার অনুপস্থিতিতে অফিসের দরজা ভেঙে কম্পিউটার জব্দ সন্দেহজনক। তারা নতুন কিছু যে সেখানে যোগ করবে না সেটির তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি আছি।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সালাউদ্দিন কাদেরের ফাঁসির রায় দেন ট্র্যাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার আগেই রায়ের খসড়া ফাঁস হওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরদিন বুধবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রেজিস্ট্রার এ কে এম নাসিরউদ্দিন মাহমুদ রায়ের খসড়া কপি ফাঁসের কথা স্বীকার করেন এবং শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top