সকল মেনু

আইসিএস-এর প্রতিবেদন, ছয় মাসের মধ্যে ক্ষমতা নেবে সেনাবাহিনী

ICW-Logo20131003184626 মেহেদি হাসান, ঢাকা, ৪ অক্টোবর:  আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে সেনাবাহিনী বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করতে পারে-এমন আশংকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে ইনস্টিটিউট অব কমনওয়েলথ স্টাডিজ (আইসিএস)-এর এক প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দেশের স্বার্থেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা হাতে তুলে নেবে। ইনস্টিটিউট অব কমনওয়েলথ স্টাডিজের ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো ফ্রান্সেস হ্যারিসন ১৬৬ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন,“আপাতদৃষ্টিতে তাদের (সেনাবাহিনী) ক্ষমতা নেওয়ার কোনো আগ্রহ নেই। তবে দেশে চরম অস্থিতিশীলতার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষী নেয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিলে- তা সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।” গত জুনে লন্ডনে প্রকাশিত “পলিটিক্যাল ইসলাম অ্যান্ড ইলেকশনস ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ইসলামপন্থী বিভিন্ন দল, জোট ও জঙ্গীগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আদর্শগত মিল এবং রাজনৈতিক বিরোধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ওপর। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে ধর্মনিরপেক্ষ এবং ইসলামপন্থীদের মধ্যে আদর্শগত বিরোধ এরই মধ্যে রাজপথে স্পষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পরবর্তী ছয় মাসে দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য প্রধানত ছয়টি বিষয় প্রাধান্য পাবে। সেগুলো হচ্ছে নির্বাচনকালীন প্রশাসন, যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, রাজনৈতিক পুনর্মিলন (জোট গঠন), পরস্পরবিরোধী ইসলামী শক্তিগুলোর সম্ভাব্য ঐক্য এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী খালেদাপুত্রের (তারেক রহমান) বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা। প্রতিবেদনে সামরিক বাহিনী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, দেশের বেশির ভাগ মানুষই মনে করে পরিস্থিতি ভয়াবহ না হলে এবং রাজপথে সংঘাতের কারণে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না গেলে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতায় আসার কোনো আগ্রহ নেই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনকে বাংলাদেশের কাছে আকর্ষণীয় উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, জাতিসংঘ যদি ওই মিশন বন্ধের ব্যাপারে কোনো হুমকি দেয় তাহলে সেই সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দখলে উদ্যোগী হতে যথেষ্ট উৎসাহিত করবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগোষ্ঠীর চেয়ে ইসলামপন্থীদের ব্যাপারে সামরিক বাহিনী বেশি সহানুভূতিশীল বলে অনেকে যুক্তি দেখিয়েছেন। তাদের মতে, সামরিক বাহিনীর মধ্যে হিন্দু ও ভারতবিরোধী মনোভাব এখনো প্রবল। তাছাড়া ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়ে যেসব ইসলামপন্থী তরুণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন তাদের অনেকেই এখন অবসর নিচ্ছেন। ফলে সেনাবাহিনীতে জামায়াতের মতো দলের প্রভাব এখন কমে এসেছে।

তবে কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র ব্যর্থতার কারণে তরুণ ও মাঝারি পর্যায়ের সেনাকর্মকর্তাদের একটি অংশের মধ্যে হতাশা প্রবল আকার ধারণ করছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top