ইকবাল হোসেন, রংপুর: বিশ্ব কন্যা শিশু দিবসে রংপুরে কাউন্সিলরের বাড়ির গৃহপরিচারিকার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। টিভি দেখার অপরাধে মহিলা কাউন্সিলর কর্তৃক কাজের মেয়েকে মারধরের পর মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার। এব্যাপারে এখনো কোন মামলা হয়নি। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসি সুত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্য পীরজাবাদ রহমতপাড়া এলাকার রড মিস্ত্রী দুখু মিয়ার মেয়ে দীপা বেগম (১০) বাড়ির পার্শ্ববর্তী সহকারি অধ্যাপক শাহেদুল ইসলামের বাড়িতে ৪-৫ বছর ধরে কাজের মেয়ে হিসেবে কাজ করত। শাহেদুলের স্ত্রী রুনা লায়লা ফরিদা বানু রংপুর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর এবং জোবেদা আজিজন বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারি শিক্ষিকা। গতকাল সোমবার সকালে কাজের মেয়ে দীপা কাজের ফাঁকে টিভি দেখছিল। এসময় গৃহকর্তী রুনা লায়লা টিভি দেখার অপরাধে মেয়েটিকে মারধর করেন। মারধরের পর মেয়েটিকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাবার জন্য মেয়ের মাকে অনুরোধ করেন। এরপর মেয়েটি বিষপান করে। দ্রুত তাকে বেসরকারি প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। পরে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত(বিকেল সাড়ে ৫টা ) লাশ দাফন করা হয়নি। এলাকাবাসি অভিযোগ করেন বাড়ির লোকজন প্রায়ই মেয়েটিকে মারধর করত। এরফলে মেয়েটি অনেকদিন ওই বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরবর্তীতে আবারও তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল। গৃহকর্তীর মারধরের ফলেই মেয়েটি মারা গেছে বলে এলাকার অনেকেই মনে করছেন।। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এক কাউন্সিলর থানা পুলিশ ও সাংবাদিককে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গৃহকর্তা সহকারি অধ্যাপক শাহেদুল ইসলাম বলেন, তার স্ত্রী রুনা লায়লা ফরিদা বানু কাজের মেয়ে দীপাকে স্কেল দিয়ে দুতিনটি আঘাত করে। এতে মেয়েটি হিংসার জাত বলে তার স্ত্রীকে গাল দেয়। এরপর মেয়েটির মা মালতি বেগম চলে আসে ওই বাড়িতে। তাকে তার মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা বলি। এতে মেয়েটি এ বাড়ি থেকে যাবে না বলে জানায়। এর কিছুক্ষন পর বাড়ির লোকজন জানায়, মেয়েটি বিষ খেয়েছে। এরপর তাকে মোটর সাইকেলে করে স্থানীয় প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গৃহকর্তী মহিলা কাউন্সিলর রুনা লায়লা ফরিদা বানু বলেন, মেয়েটিকে নির্যাতন করা হয়নি। মেয়েটিকে বাড়ি থেকে চলে যাবার কথা বলায় সে নিজেই বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া মেয়েটি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। এব্যাপারে নিহত মেয়ের মা মালতি বেগম কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ না করেন জানান, তার মেয়ে ক্ষোভে হয়ত আত্মহত্যা করেছে। তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ । কোন ঝামেলায় যেতে চাই না। কোতয়ালি থানার ওসি শাহাবুদ্দিন খলিফা জানান, এ বিষয়ে এখনও কোন মামলা হয়নি। বিষয়টি তদন্তে এসআই রায়হানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।