সকল মেনু

নারী চিকিৎসককে গলা কেটে হত্যা, বন্ধু রেজা গ্রেপ্তার

হটনিউজ ডেস্ক:

রাজধানীর পান্থপথের একটি আবাসিক হোটেলে নারী চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দীককে (২৭) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তার বন্ধু রেজাউল করিম রেজাকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) চট্টগ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রেজাউলকে ঢাকায় আনা হয়েছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার পরপরই তথ্য পেয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে র‌্যাব। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে প্রেমিক রেজাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে শুক্রবার (১২ আগস্ট) বেলা ১১টায় কারওয়ান র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

এর আগে বুধবার (১০ আগস্ট) রাতে পান্থপথের ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামের একটি আবাসিক হোটেল থেকে জান্নাতুলের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকালই একটি হত্যা মামলা করেন নিহত নারীর বাবা চিকিৎসক শফিকুল আলম।

ঘটনার পর পুলিশ জানায়, ওই আবাসিক হোটেলটিতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রেজাউল করিম রেজা নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে উঠেছিলেন জান্নাতুল। এরপর সুযোগ বুঝে স্বামী পরিচয়ধারী কথিত ছেলেবন্ধু রেজাউল তাকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যান।

পুলিশ বলছে, জান্নাতুলের সঙ্গে রেজার প্রেমের সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিন। বিষয়টি জানত জান্নাতুলের পরিবার। এর আগেও তারা দুজন একাধিকবার দেখা করেছে এবং বাইরে ঘুরতেও গিয়েছিল। একসময় মেয়ের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন রেজা। তবে তার চরিত্রগত সমস্যার কারণে বিয়েতে রাজি ছিল না নারী চিকিৎসকের পরিবার। তবুও তারা দুজনে মেলামেশা চালিয়ে যায়।

জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকের বাবা শফিকুল আলম বলেন, মগবাজার কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ থেকে সদ্য এমবিবিএস পাস করে জান্নাতুল। এরপর ঢামেক হাসপাতালে গাইনি বিষয়ে একটি কোর্সে অধ্যয়নরত ছিল। বুধবার সকাল ৮টার দিকে জান্নাতুল বাসা থেকে বের হয় ক্লাসের কথা বলে। রাত ১০টার দিকে বাসায় ফিরবে বলে জানায়। তবে বাসায় না ফেরায় ১১টার দিকে তার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।

অভিযুক্ত রেজাউল করিম রেজার বিষয়ে তিনি বলেন, মেয়ে জান্নাতুল একদিন তার সঙ্গে রেজাকে বন্ধু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার। গাজীপুর জয়দেবপুর একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিল। জেনেছি, ব্যাংকে নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে চাকরি হারিয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না। মামলার কপিতেও রেজার পরিচয় ও ঠিকানা অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, গতকাল সকালে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে আবাসিক হোটেলটিতে উঠেছিলেন দুজন। পরে রাত ৮টার দিকে রেজাউল হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাকে ফোন করেন হোটেলের ব্যবস্থাপক। তখন রেজাউল জানান, কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি হোটেলে ফিরবেন। গভীর রাতেও না ফিরলে হোটেল থেকে আবার তাকে ফোন দেওয়া হয়। এবারও রেজাউল জানান, তিনি ফিরে আসবেন।

এর কিছুক্ষণ পর মুঠোফোন বন্ধ করে দেন রেজাউল। এতে হোটেল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। পরে হোটেলের কক্ষে গিয়ে জান্নাতুলের গলা কাটা মরদেহ দেখতে পায় তারা। তখন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। এ নিয়ে কলাবাগান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top