আফিফা জামান, ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর: ব্যাংকিংখাতে খেলাপি ঋণের সংখ্যা কমাতে সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। একইসঙ্গে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী ও এ খাতকে রাজনীতিকরণ মুক্ত রাখা জরুরি বলে মনে করেন তারা। প্রবীন অর্থনীতিবিদ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় সুশাসন না থাকায় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক বিবেচনায় অযোগ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তারাই ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি, প্রভাব খাটানো, অদক্ষতা প্রভৃতি বিষয় এক্ষেত্রে কাজ করে। ঋণ খেলাপিরা অর্থঋণ আদালতের আশ্রয় নেন এবং আইনজীবী নিয়োগ দিয়ে পার পেয়ে যান। খেলাপি ঋণ বাড়ার কারণে ব্যাংকের তহবিল ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, ফলে সুদ হার কমছে না। খেলাপি ঋণ দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেশি। খেলাপি ঋণ বন্ধ করতে হলে সরকারি ব্যাংকগুলোকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে হবে। বেশিরভাগ ব্যাংকের পরিচালক ব্যাংকিং খাতে দক্ষ নন বলে মনে করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঋণ খেলাপি কমাতে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং জোরদার আইনের যথাযথ ব্যবহার করা দরকার। ঋণ দেয়ার উদ্দেশ্যে মাঠে গিয়ে তত্ত্বাবধান করতে হবে। যথাযথ ব্যবসায়ীকে ঋণ দিতে হবে। না হলে ঋণ খেলাপি কমবে না। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মতো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকেও শাসনের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে দেয়া উচিত বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ।
প্রসঙ্গত, গতবছরের হিসেবে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে মোট ৫১ হাজার ২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।