সকল মেনু

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে দেনা পরিশোধের নির্দেশ

Standard-bank-sm20130926063300  আফিফা জামান, হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা:  গ্রাহকের অর্থ নিয়ে টালবাহানা করে রক্ষা পেলো না বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। শেষ পর্যন্ত পাওনাদার ইন্টারন্যাশনাল ডিজাইনার অ্যান্ড কন্সট্রাক্টর (আইডিসি) লিমিটেডকে অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। ২৭ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৩২ লাখ টাকা পরিশোধে টালবাহানা করছিলো ব্যাংকটি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র এএফএম আসাদুজ্জামান হটনিউজকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, বুধবারই মৌখিকভাবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অর্থ পরিশোধ করতে। আর বিষয়টি সুরাহা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালত রুল জারির পর গ্রাহকের অর্থ পরিশোধ করতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার উচ্চ আদালত অবমাননা মর্মে রুল দেয়।

সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চাপে শেষ পর্যন্ত বেআইনিভাবে আটকে রাখা গ্রাহকের অর্থ পরিশোধে নির্দেশ জারি হয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রতি। খুব শিগগিরই অর্থ পরিশোধ করতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে।

সূত্র মতে, বিদেশি মালিকানার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের খামখেয়ালিপনাতে মূলত ফেঁসে গেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। বিদেশি খাতের এই ব্যাংকটি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালন না করায় হাইকোর্ট রুল দিয়েছেন গভর্নরের বিরদ্ধে।

সূত্র বলছে, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ভবন নির্মাণকাজের বিল প্রাপ্য ছিল ইন্টারন্যাশনাল ডিজাইনার অ্যান্ড কন্সট্রাক্টর (আইডিসি) লিমিটেডের। এ বিল বাবদ ১৯৮৬ সালে অক্টোবর থেকে ’৮৭ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আইডিসির অনুকূলে মোট ৩২ লাখ ৭ হাজার ১২৫ টাকার ছয়টি অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক ইস্যু করে পিডিবি। চেকগুলো অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চট্টেশ্বরী রোড শাখায় পিডিবির হিসাবের ওপর ড্র করা ছিল।

কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক থেকে এসব চেকের বিপরীতে অর্থ সংগ্রহ করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (তত্কালীন আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক) তা আইডিসির হিসাবে জমা না করে এনসিসি ব্যাংকের (তৎকালীন ন্যাশনাল ক্রেডিট লিমিটেড) হাতে তুলে দিয়েছিল। ২৭ বছর ধরে অনেক চেষ্টা-তদবিরেও অর্থ ফেরত পায়নি আইডিসি।

জানা গেছে, পরে আইডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মজিদ এ পর্যন্ত অর্জিত সুদসহ এই অর্থ ফেরত পেতে ২০১২ সালের ২৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ চেয়ে আবেদন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করে আইডিসি। বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়াও এনসিসি ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে এ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিতে রিট আবেদন করেন এমএ মজিদ।

শুনানি শেষে গত ১১ মার্চ আদালত সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন আদেশের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১১ এপ্রিল আদালতের রায় অনুসারে ব্যবস্থা নিতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে নির্দেশ দেয়। কিন্তু নানা অজুহাতে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এর ফলে কেন গভর্নরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না মর্মে রুল দেন আদালত। একই রুলে বিআরপিডির মহাব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

আইডিসি’র এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top