সকল মেনু

হামরা আজাকারের ডাকা হরতাল মানলেই ’ত

images (13)  ঠাকুরগাঁও অফিস ও হুমায়ুন কবীর, বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) থেকে:  স্বাধীনতার স্বপক্ষের মতাবলম্বীরা ছাড়াও জেলার সচেতন আবাল বৃদ্ধ বণিতা জামায়াতকে “না” বলায় আজ বুধবার জামায়াতের ডাকা টানা ৪৮ ঘন্টা হরতালের প্রথমদিন জেলার ৫ টি উপজেলার কোথাও হরতাল হয়নি। শুধু তাই নয়, জামায়াত বা শিবিরের কাউকে কোথাও পিকেটিং করতেও দেখা যায়নি। তবে স্থানীয়ভাবে বাস বলাচল বন্ধ থাকলেও জেলার সর্বত্র অফিস আদালত, ব্যাংক বীমা সহ সকল প্রকার প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল অন্যান্যদিনের মতই।

বিগত ৪ টি সংসদীয় নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে জামায়াতকে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রতিবার আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়। জামায়াতের বেশ শক্ত ঘাটি বলে ঠাকুৃরগাঁও-২ (বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রানীশংকৈল উপজেলার আংশিক) পরিচিত হলেও ওই আসনের কোথাও কোন হরতাল পালিত হয়নি। এমনকি কোন জামায়াত-শিবিরের কোন সদস্যকেও কোথাও দেখা যায়নি।

রানীশংকৈল কলেজ বাজারে পাট বোঝাই ভ্যান চালিয়ে আসছিলেন ষাটোর্দ্ধ রাজ্জাক মিয়া। কেমন হরতাল চলছে বলতেই বেশ রাগতস্বরে বলে উঠলেন, আজাকারের ফের হরতাল বাহে। আজাকারলাক বাঁচাবার তুনহে হরতাল ডাকিছে উমরাহ। হামরা আজাকারের ডাকা হরতাল মানলেই ’ত। আজাকারলা আসুক কেনহে হরতাল করিবার, মাঠত রেদখা যাবে। পাশেই ছিলেন রানীশংকৈল উপজেলার আওয়ামীলীগ নেতা মামুনুর রশীদ এলবার্ট। তিনি বলে উঠলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে রানীশংকৈলে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে ওই রাজাকার, আলবদর আর তাদের দোসররা হত্যা করেছিল। আমরা রাজাকারদের ভালমতই চিনি। রানীশংকৈলের মানুষ ১৯৭১ সালে রাজাকারদের তান্ডব এখনো ভুলে নাই। তাই রাজাকারদের বাঁচাতে কোন কর্মসূচিই সাধারন মানুষ মানেনা। এলাকার মানুষের মুখে একটাই কথা, রাজাপকারদের “না”হরিপুর আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ জিয়াউল হাসান মুকুল বলেন, হরিপুর এলাকায় ’৭১ এ স্বজনহারা মানুষ এলাকার মানুষ চিনে। জামায়াত রাজাকারদের বাঁচাতে হরতাল দিয়েছে। দেশের অন্যকোথাও সুবিধা করতে পারলেও অন্ততঃ এ এলাকায় জামায়াতের রাজনীতি মানুষ মানেনা। তাই জামায়াতের কেউ কোন হরতাল করতে সাহস পায় না।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর জানান, সর্বস্তরের মানুষ আমরা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাকে জামায়াত-শিবির মুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষনা দিয়েছি। নির্বাচনের সময় বিএনপির কিছু লোক জামায়তকে ভোট দেয়। কিন্তু এলাকা জামায়াতমুক্ত। স্বজনহারাদের সামনে রাজাকারদের বাঁচানোর কোন কর্মসূচিই মানুষ মেনে নেয় না। এলাকার মানুষ জামায়াতকে “না” বলেছে।

এ প্রসংগে ঠাকুরগাঁও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ একরাম, যুবলীগ সাধারন সম্পাদক আঃ মজিদ আপেল বলেন, শোকের মাতম এখনো চলছে কিছু কিছু পরিবারে। সাধারন মানুষই জামায়াতকে ঠেকাতে বদ্ধপরিকর। স্বজনহারাদের তোপের মুখে পড়তে পারে এজন্যই জামায়াত শিবির হরতাল ডাকলেও জেলায় হরতালের কোন প্রভাব পড়েনি।

এ ব্যাপারে জেলা জামায়াতের আমির ও ঠাকুরগাঁও-২ আসনে বিগত নির্বাচনের পরাজিত প্রার্থী মাওলানা আঃ হাকিমকে হরতাল কেমন পালিত হচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি। জামায়াত-শিবির নেতা কর্মীরা স্বজন হারাদের তোপের মুখে পড়তে পারে, এজন্যই কি জামায়াত শিবিরের কাউকে হরতালে দেখা যায়নি-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সময় হলেই হয়তো দেখা যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top