সকল মেনু

মেয়ের শোকে সাংবাদিক মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

 Tonni20130916175840 নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর:  হাসপাতালে পাঁচ বছরের চন্দ্রমুখীর মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ মেয়েটি তিন দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিল।

দিন রাত মেয়ের পাশে কাটিয়েছেন বাবা-মা। মেয়েকে হাসপাতালে রেখে কিছুক্ষণের জন্য বাসায় ফিরেছিলেন মা। আর এর মধ্যেই খবর আসে- চন্দ্রমুখী আর নেই। এই শোক সহ্য করতে পারেননি সাংবাদিক মা নাজনীন আক্তার।
নিজ বাসার পাঁচ তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও ডান হাত ভেঙে গেছে, মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। চন্দ্রমুখীর বাবা রকিবুল ইসলাম মুকুলও পেশায় সাংবাদিক।

গত শনিবার রকিবুল ইসলাম মুকুল তার ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, `এই পৃথিবীতে যাকে সবচে বেশি ভালবাসি সেই চন্দ্রমুখী এখন আইসিউতে লাইফ সাপোর্ট এ… ওর প্রত্যেকটা কষ্ট দ্বিগুণ হয়ে ফিরে আসছে আমার বুকে… আমি যে বাবা… সবার কাছে মন থেকে দোয়া ভিক্ষা চাই- আল্লাহ যেন চন্দ্রমুখীকে আমার কোলে ফিরিয়ে দেন।` তার সেই লেখাটিতে শত শত মানুষ প্রার্থনা জানিয়ে চন্দ্রমুখীর সুস্থতা কামনা করেন। কিন্তু সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে সোমবার বিকেলে চলে যায় চন্দ্রমুখী।

গাজী টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক রকিবুল ইসলাম মুকুল ও জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নাজনীন আক্তারের একমাত্র সন্তান চন্দ্রমুখী। পাঁচ বছরের মেয়েটি জন্মের পর থেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। মাঝে মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হতো।
সর্বশেষ গত তিন দিন আগে চন্দ্রমুখীকে রাজধানীর শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে চন্দ্রমুখীকে হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। নাজনীন মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালেই ছিলেন। বেলা ৩টার দিকে হাসপাতাল থেকে কিছুক্ষণের জন্য বাসায় ফেরেন।
৪টার দিকে খবর আসে চন্দ্রমুখী আর নেই। চন্দ্রমুখী আর বাসায় ফিরবে না এমন কথা হয়ত কল্পনাই করতে পারেননি নাজনীন। শেষ পর্যন্ত এই শোক সহ্য করতে না পেরে বাসার ছাদে গিয়ে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, রাস্তার উপর লাফিয়ে পড়েছেন নাজনীন। এলাকার লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। উপস্থিত চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেন।
নাজনীনের ডান হাতটি ভেঙে গেছে। গুরুতর আঘাত পেয়েছেন মাথা, বুক, ঘাড় ও কোমরে। ঢাকা মেডিক্যালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। নাজনীনের সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। মাথার আঘাতটি অবশ্য খুব গুরুতর নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

কল্যাণপুরের ১০ নম্বর রোডের চার তলা একটি বাড়ির চতুর্থ তলাতেই থাকতেন তারা। গাজী টেলিভিশনে যোগ দেয়ার আগে আরটিভি ও মানবজমিন পত্রিকাসহ একাধিক জায়গায় কাজ করেছেন মুকুল। আর নাজনীন জনকণ্ঠের কূটনৈতিক ও সংসদ বিষয় রিপোর্ট করতেন।
সাংবাদিক মহলের ঘনিষ্ঠ এই সাংবাদিক দম্পতি সব সময় থাকতেন হাসি-খুশি। সবার সঙ্গেই ছিল তাদের সখ্যতা। মুকুলের বাড়ি রংপুর। আর নাজনীনের বাড়িও একই এলাকায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top